সমকালীন প্রতিবেদন : পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহ হল চাঁদ। পৃথিবীর চারপাশে ঘোরার পাশাপাশি এটি সূর্যের আলোতেই আলোকিত হয়। এদিকে, পৃথিবীর বুকে প্রানের অস্তিত্ব অনেকটা চাঁদের উপর নির্ভরশীল। সেই কারণেই বারবার চাঁদে অভিযান চালিয়েছে বিভিন্ন দেশ।
সেই তালিকায় নাম রয়েছে আমেরিকা, রাশিয়া, ভারত, চীন, জাপান সহ একাধিক দেশের। কিন্তু শুরুতে সবাই চাঁদের উত্তর মেরু অর্থাৎ আলোকিত অংশেই পাঠিয়েছে তাদের নভোযান। তবে সেসব এখন অতীত। এখন চাঁদের অন্ধকারাচ্ছন্ন দক্ষিণ গোলার্ধকে নিয়ে বাড়ছে কৌতূহল।
বিজ্ঞানীদের ধারণা, সেখানেই লুকিয়ে রয়েছে অনেক অজানা রহস্য। আর এইসব রহস্যের সন্ধানে গত বছর আগস্টে চাঁদের দক্ষিণ গোলার্ধে চন্দ্রযান-৩-কে পাঠিয়েছিল ভারত। সফলভাবে অবতরণ করে তৃতীয় বিশ্বের সব দেশকে চমকে দিয়েছিলেন ইসরোর বিজ্ঞানীরা।
আর ভারতের পিছু পিছু চাঁদের এই অন্ধকার স্থানে অভিযান চালাবে চীনও। চিনের মহাকাশ বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে মহাকাশযান পাঠানোর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন তাঁরা। সেই চন্দ্রাভিযানের নাম ‘চাংই-৭’। ২০২৬ সাল নাগাদ এই অভিযান চালানো হবে।
কিন্তু চাঁদের কুমেরুকে ঘিরে কেন এত কৌতূহল সব দেশের? এর উত্তর পেতে গেলে ফিরে যেতে হবে ৪ বছর আগে। ২০২০ সালে আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা এবং জার্মান এরোস্পেস সেন্টারের যৌথ প্রচেষ্টায় নির্মিত সোফিয়া টেলিস্কোপ চাঁদের দক্ষিণ মেরু সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আবিষ্কার করে।
জানা যায়, এই অংশে জল এবং অন্যান্য একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ লুকিয়ে রয়েছে। চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে সূর্যের আলো পড়ে না। এই অংশটি চিরআঁধারে নিমজ্জিত। বিজ্ঞানীদের মতে, এই অংশে প্রাণের অস্তিত্বের জন্য উপযোগী সম্পদ পাওয়া যেতে পারে।
তবে চাঁদের সেই অংশ যতটা সম্ভাবনাময়, ততটাই ‘বিশ্বাসঘাতক’। দক্ষিণ মেরুর পদে পদে রয়েছে বিপদ এবং প্রতিকূলতার হাতছানি। অংশটি সম্পূর্ণরূপে বরফে মোড়া। এখানে বিশাল বিশাল কিছু খাদ রয়েছে। কোনও কোনও ক্ষেত্রে খাদের বিস্তার হাজার কিলোমিটারেরও বেশি।
আলো কম থাকায় উন্নত প্রযুক্তি সম্বলিত মহাকাশযানও এই অংশে এসে কাবু হয়। তবে এই কঠিন অভিযানে কয়েকমাস আগেই সাফল্য পেয়েছে ভারত। আর এবার ভারতের দেখাদেখি সেখানে নিজেদের অধিকার জমাতে ছুটছে চীনও। ভবিষ্যৎ বলবে, চীনের এই প্রয়াস কতটা সফল হয়।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন