সমকালীন প্রতিবেদন : চাঁদ এবং মঙ্গলের বাইরে জীবের জন্মানোর উপযুক্ত পরিবেশের সন্ধান চালিয়ে যাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। তাতে এবার বড় সাফল্য পেল নাসা। এবার বৃহস্পতির বরফাবৃত উপগ্রহ ইউরোপায় কার্বন-ডাই-অক্সাইডের সন্ধান পেল তারা। আর তাতেই হিমশীতল ওই উপগ্রহে প্রাণধারণের অনুকূল পরিবেশ থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এই উপগ্রহের নাম ইউরোপা।
এই ইউরোপা হল বৃহস্পতি গ্রহের চারদিকে পরিক্রমণকারী চারটি গ্যালিলীয় উপগ্রহগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ছোট উপগ্রহ। এখনও পর্যন্ত আবিষ্কার হওয়া বৃহস্পতির ৮০ টি উপগ্রহের মধ্যে বৃহস্পতি থেকে দূরত্বের দিক থেকে এটি ষষ্ঠ অবস্থানে রয়েছে। এটি সৌরজগতের ষষ্ঠ বৃহত্তম উপগ্রহ।
বিজ্ঞানী গ্যালিলিও গ্যালিলেই ১৬১০ সালে এই উপগ্রহটি আবিষ্কার করেন। গ্রীক পুরাণের ইউরোপার নাম অনুসারে এই উপগ্রহটির নামকরণ করা হয়। আকৃতিতে চাঁদের তুলনায় সামান্য ছোট ইউরোপা। এই গ্রহের মাটি প্রধানত সিলিকেট শিলা দ্বারা তৈরি। এর নীচে বরফের আবরণ এবং সম্ভবত লোহা–নিকেলের কেন্দ্র রয়েছে বলে অনুমান বিজ্ঞানীদের।
এছাড়াও, এই উপগ্রহের মধ্যে হালকা বায়ুমন্ডল রয়েছে এবং সেটি মুলত অক্সিজেন দ্বারা গঠিত। এর উপরিতল ফাটল দ্বারা রেখাঙ্কিত, তবে গর্ত অপেক্ষাকৃত কম। সৌর জগতের কঠিন গ্রহ-উপগ্রহের মধ্যে ইউরোপার পৃষ্ঠ সবচেয়ে মসৃণ।
বহিঃতলের আপাত নবীনতা এবং মসৃণতা একটি ধারণার জন্ম দিয়েছে যে, এটির নিচে জলের একটি বিশাল মহাসাগরের অস্তিত্ব থাকতে পারে। যার মধ্যে হয়তো বহিঃজাগতিক প্রাণের আশ্রয় হতে পারে। যদিও কোনও নভোযান এখনো ইউরোপায় অবতরণ করে নি। তবে আগামী দিনে ইউরোপার উদ্দেশে দু'টি অভিযানের লক্ষ্য রয়েছে নাসার।
জানা গেছে, ২০২৪ সালে তাদের ক্লিপার অভিযানের সূচনা হবে। এই অভিযানে, কক্ষপথ থেকে ইউরোপাকে পর্যবেক্ষণ করবে মহাকাশযানটি। সেখানে প্রাণধারণের উপযুক্ত পরিবেশ রয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখবে ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি-র জুপিটার আইসি মুন এক্সপ্লোরার।
২০৩১ সালে ইউরোপার কাছাকাছি পৌঁছবে সেটি। বৃহস্পতির তিনটি গ্রহ– ইউরোপা, গানিমিড এবং ক্যালিস্টোর চারপাশে ৩৫ বার চক্কর কাটবে। তাই এই গ্রহকে নিয়ে যে সম্ভাবনা এখন চলবে, তা মোটামুটি স্পষ্ট। আর এই সম্ভাবনা থেকেই হয়তো কিছু চমকপ্রদ বাস্তব উঠে আসবে বিজ্ঞানীদের হাতে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন