সমকালীন প্রতিবেদন : 'সন্দীপ তুই বদলে গেলি? কী করে তোকে 'বন্ধু' বলি,' 'ছি: সন্দীপ, ছি: ছি:- তোকে সবাই বলছে কি!', 'এ-ই আমাদের নোটন নয়- একে, বন্ধু ভাবতে লজ্জা হয়', 'তড়িঘড়ি ভাঙলো দেওয়াল, কি করেছিল প্রিন্সিপাল?' এমনই বেশ কিছু স্লোগানে ভরে উঠলো প্রতিবাদ মিছিল। এইসব স্লোগান লেখা প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে প্রতিবাদ মিছিলে সামিল হলেন আরজিকর হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের বনগাঁ হাইস্কুলের সহপাঠীরা।
আরজিকর হাসপাতালের নারকীয় হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তোলপাড় গোটা দেশ। প্রতিদিন রাজ্যের এবং দেশের বিভিন্ন প্রান্তে প্রতিবাদের ঢেউ আছড়ে পড়ছে। সীমান্ত শহর বনগাঁও তার ব্যতিক্রম নয়। এখানেও প্রতিদিন দফায় দফায় প্রতিবাদী কন্ঠ সরব হচ্ছে। বিচার চেয়ে আকাশ বাতাস মুখরিত হচ্ছে।
গত কয়েকদিন ধরেই বনগাঁতে নানা সময় মিছিল বের হচ্ছে। আর এই সমস্ত কর্মসূচিকে ছাপিয়ে গেল রবিবার সন্ধ্যের প্রতিবাদ মিছিল। সমাজ মাধ্যমে আরজিকর কান্ডের প্রতিবাদ জানাতে একত্রিত হওয়ার আবেদন জানানো হয়েছিল বনগাঁর বিভিন্ন স্কুলের বর্তমান এবং প্রাক্তনীদের। তৈরি হয়েছিল একাধিক হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ।
আর সেই আবেদনে সাড়া দিয়েই সেদিন সন্ধ্যে সাতটার আগেই নীলদর্পণের সামনে এক এক করে জড়ো হতে থাকেন বনগাঁ হাইস্কুল, বনগাঁ কুমুদিনী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়, শক্তিগড় হাইস্কুল, কেশবলাল হাইস্কুল, কালিতলা বিশ্ববন্ধু শিক্ষা নিকেতন, অসিত বিশ্বাস শিক্ষা নিকেতন সহ একাধিক স্কুলের প্রাক্তন এবং বর্তমান ছাত্রছাত্রীরা। সঙ্গে বিভিন্ন গানের স্কুলের ছাত্রছাত্রীরাও হাজির ছিলেন। এরপর শুরু হয় প্রতিবাদ মিছিল।
হাতে ব্যানার, ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ডে ফুটে উঠেছিল বিভিন্ন প্রতিবাদী ভাষা। মিছিল নীলদর্পণ থেকে শুরু করে রায়ব্রিজ, মতিগঞ্জ, রাখালদাস সেতু, বাটা মোড়, কোর্ট রোড হয়ে ফের নীলদর্পণের সামনে শেষ হয়। আর এই মিছিলে কয়েক হাজার বর্তমান এবং প্রাক্তন ছাত্রছাত্রীর উপস্থিতি এক অন্য মাত্র যোগ করেছিল। সাম্প্রতিককালে বনগাঁ শহর এমন প্রতিবাদী মিছিল দেখেনি।
মিছিল থেকে উঠে আসছিল শুধু একটাই আওয়াজ, 'উই ওয়ান্ট জাস্টিস।' আরজিকর কান্ডে যার দিকে সব থেকে বেশি আঙুল উঠছে, সেই প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ ঘটনাচক্রে এক সময়কার বনগাঁর বাসিন্দা এবং বনগাঁ হাইস্কুলের মেধাবী প্রাক্তনী। কিন্তু তার মতো একজন প্রাক্তনী বর্তমানে এমন কাণ্ডের সঙ্গে জড়িয়ে যেতে পারেন, তা যেন বিশ্বাসই হচ্ছে না তাঁর সহপাঠীদের।
আর তাই তাঁকে উদ্দেশ্য করেই বিভিন্ন স্লোগান লেখা প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে এদিন মিছিলে পা মেলালেন তাঁরই সহপাঠীরা। তাঁদের প্রত্যেকের দাবি, আরজিকর কাণ্ডে যদি সন্দীপ ঘোষ সত্যি দোষী হন, তাহলে তাঁর যেন চরম শাস্তি হয়। তিনি দোষী প্রমাণিত হলে, তাঁর নাম বনগাঁ হাইস্কুলের মেধাবী প্রাক্তনীদের তালিকা থেকে মুছে দেওয়া হয়- সেই দাবি ইতিমধ্যেই উঠেছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন