সমকালীন প্রতিবেদন : অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের মিড ডে মিলের খাবারের ভেতরে মিলল বিষাক্ত পোকা। আর এমনই অভিযোগকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়ালো উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটা ব্লকের একটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে। ঘটনায় ক্ষুব্ধ অভিভাবকেরা খাবার নিয়ে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের সামনে বিক্ষোভও দেখালেন।
জানা গেছে, গাইঘাটা ব্লকের পূর্ব চক্রের অন্তর্গত ডিঙ্গামানিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভেতরেই দুটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র চলে। ওই দুটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের নিজস্ব কোনও ঘর না থাকায়, ওই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি ঘরেই পড়াশোনা এবং পাশে মিড ডে মিলের রান্নার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
প্রতিদিনের মতো শুক্রবার সকালেও নিয়ম মেনে খিচুড়ি রান্না করা হয়। শিক্ষার্থীরা সেই খাবার পাত্রে করে বাড়িতেও নিয়ে যায়। এদেরই মধ্যে এক শিক্ষার্থীর মা নমিতা দাস বাড়িতে খাবারের পাত্র খুলে দেখেন, তার বাচ্চার খাবারের ভেতরে একটি বিষাক্ত পোকা রয়েছে, তার অভিযোগ মতে, পোকাটি রান্না করা অবস্থাতেই পাত্রের মধ্যে পড়েছিল।
এরপরেই তিনি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে হাজির হয়ে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলতে থাকেন। আর এই ঘটনার কথা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে অন্যান্য অভিভাবকদের মধ্যে। তাদের মধ্যেও আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। অনেকেই সেই সময় অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে হাজির হয়ে প্রতিবাদ করতে থাকেন।
ঘটনার খবর পেয়ে স্কুলে হাজির হন রান্নার কাজে যুক্ত ওই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের মহিলা কর্মী। তার বক্তব্য অনুযায়ী, তিনি রান্না করার আগে ভালো করে রান্নার সামগ্রী বেছে তারপরই রান্না করেছেন। বাচ্চাদের খাবার দেওয়ার পর কেউ হয়তো একজনের পাত্রে ওই পোকা দিয়ে দিয়েছে।
তার এই যুক্তি মানতে নারাজ অভিভাবকেরা। তাদের বক্তব্য, রান্না করার সময় এব্যাপারে আরো বেশি সচেতন হওয়ার প্রয়োজন ছিল। আর অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের নিজস্ব ঘর না থাকায়, সমস্যা আরো তীব্র হচ্ছে। এব্যাপারে অভিভাবকেরা সরকারি দপ্তরের আধিকারিকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
ডিঙ্গামানিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক জানান, অঙ্গনারী কেন্দ্রের পরিকাঠামো নির্মাণের জন্য বেশ কিছুদিন আগেই ১৪ লক্ষ টাকা সরকারিভাবে অনুমোদন পায়। এলাকা পরিদর্শনেও আসেন আধিকারিকরা। কিন্তু তারপরেও কোনো এক অজানা কারণে এখনো পর্যন্ত এই দুই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের পরিকাঠামো তৈরি হয়নি। ফলে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি ঘরেই চলছে এই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র।
এদিনের ঘটনার বিষয় গাইঘাটার ব্লক উন্নয়ন আধিকারিক নীলাদ্রি সরকার জানান, 'ঘটনাটা খুবই দুঃখজনক। ওই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে রান্নার দায়িত্বে থাকা কর্মীর এব্যাপারে আরো বেশি সচেতন হওয়া উচিত ছিল।'
আগামীদিনে যাতে এই ধরনের ঘটনা আর না ঘটে, তার দিকে সজাগ দৃষ্টি রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বিডিও। এদিনের খাবার খেয়ে যদি কোনো পড়ুয়া অসুস্থ হয়, তার জন্য যাতে দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয় তারও উদ্যোগ নিয়েছে প্রশাসন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন