সমকালীন প্রতিবেদন : ডেঙ্গুর মশা নির্মূল করতে অন্যতম হাতিয়ার গাপ্পি মাছ। আর এবার সেই গাপ্পি মাছকে শহরের বিভিন্ন পুকুরে ছাড়ার ব্যবস্থা করল বনগাঁ পুরসভা। শুক্রবার তারই সূচনা হলো। এদিন শহরের একাধিক ওয়ার্ডের পুকুরগুলিতে ৭৫ হাজার গাপ্পি মাছ ছাড়া হল।
বর্ষা শুরু হতেই রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যেই বনগাঁ পুরসভা সহ মহকুমার একাধিক ব্লকে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সন্ধান মিলেছে। স্বাভাবিকভাবেই চিন্তিত প্রশাসন। এব্যাপারে উদ্বিগ্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার নির্দেশও দিয়েছেন।
মুখ্যমন্ত্রীর সেই নির্দেশমতো ইতিমধ্যেই কাজ শুরু করেছে বনগাঁ পুরসভা। পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগ এবং জঞ্জাল বিভাগের কর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে নজরদারি চালাচ্ছেন। স্প্রে করা হচ্ছে মশা মারার ওষুধ। সচেতন করা হচ্ছে নাগরিকদের। বলা হচ্ছে, কোনভাবেই কোথাও জল জমতে দেবেন না। কারণ, পরিষ্কার জমা জলেই ডেঙ্গুর মশা জন্মায়।
পুরসভা এলাকার বহুতল বাড়ি বা বিভিন্ন বাড়ির ছাদে অনেক সময় জল জমে থাকতে দেখা যায়। কিন্তু বাড়ির মালিকদের অসহযোগিতায় সেই ঘটনা পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মীদের নজর এড়িয়ে যায়। আর সমস্যা তৈরি হয় সেখান থেকেই। এব্যাপারে পদক্ষেপ করতে পুরসভার পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই ড্রোনের মাধ্যমে নজরদারি চালানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।
আর এবার পুরসভার বিভিন্ন পুকুরগুলিতে গাপ্পি মাছ ছাড়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। শুক্রবার পুরপ্রধান গোপাল শেঠের নেতৃত্বে পুরসভার কাউন্সিলর, স্বাস্থ্য বিভাগ এবং জঞ্জাল বিভাগের কর্মীরা বিভিন্ন ওয়ার্ডে গিয়ে বিভিন্ন পুকুরে গাপ্পি মাছ ছাড়ার ব্যবস্থা করলেন। এদিন প্রথম পর্যায়ে মোট ৭৫ হাজার গাপ্পি মাছ ছাড়া হয়েছে।
এব্যাপারে পুরপ্রধান গোপাল শেঠ জানান, 'বনগাঁ পুরসভা এলাকায় ৩৩ টি পুকুরকে চিহ্নিত করা হয়েছে, যে পুকুরের জল স্থির অবস্থায় থাকে। আর এইসব পুকুরগুলিতেই ডেঙ্গুর মশা জন্মানোর সম্ভাবনা বেশি। চিহ্নিত পুকুরগুলিতে এখন থেকে প্রতি সপ্তাহে ৭৫ হাজার করে গাপ্পি মাছ ছাড়া হবে। ডেঙ্গু মোকাবেলায় মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী পুরসভা এই উদ্যোগ নিয়েছে।'
বনগাঁ পুরসভার স্যানিটারি ইন্সপেক্টর অভিজিৎ সরকার বলেন, 'পুরসভার উদ্যোগে এলাকার পুকুরগুলিতে গাপ্পি মাছ ছেড়ে ডেঙ্গু মোকাবেলার পাশাপাশি পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মীরা প্রতিটি বাড়িতে গিয়ে সরেজমিনে খোঁজখবর করছেন। নাগরিকদের কাছে অনুরোধ, তারা যেন স্বাস্থ্যকর্মীদের সহযোগিতা করেন এবং নিজেরা বাড়িতে শোবার সময় মশারি ব্যবহার করেন।'
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন