সমকালীন প্রতিবেদন : ছাত্র সমাজের ডাকে মঙ্গলবার নবান্ন অভিযানকে কেন্দ্র করে আন্দোলনকারীদের ওপর পুলিশের নির্মম অত্যাচারের অভিযোগ তুলে বুধবার রাজ্যে ১২ ঘণ্টা বনধ এর ডাক দিয়েছে বিজেপি। অন্যদিকে, এই বনধ ব্যর্থ করার জন্য সর্বতোভাবে প্রস্তুতি নিয়েছে রাজ্য সরকার। একদিকে বন্ধ সমর্থন করার জন্য বিজেপির পক্ষ থেকে সাধারণ মানুষকে আবেদন জানানো হয়েছে, অন্যদিকে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে জনজীবন স্বাভাবিক রাখার জন্য রাজ্যবাসীর প্রতি আবেদন জানানো হয়েছে।
মঙ্গলবারনবান্ন অভিযানের গোটা ঘটনার উপর নজর রাখার পর এদিন বিকেলে সাংবাদিক বৈঠক করে সুকান্ত মজুমদার বনধের কথা ঘোষণা করেন। পাশাপাশি, আজকের অভিযানে আক্রান্তদের জন্য হেল্প লাইন ও মেডিক্যাল ডেস্ক চালু করছে বিজেপি। দলের পক্ষ থেকে আক্রান্তদের আইনি ও চিকিৎসা সহায়তা দেওয়া হবে।
রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এদিন বলেন, 'শান্তিপূর্ণ মিছিলে কেন পুলিশ লাঠিচার্জ করল? কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়ল? আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে কেমিক্যাল স্প্রে করা হয়। বাংলার ছাত্র সমাজকে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী রক্তস্নান করাতে চাইছেন। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী আর পারবেন না আটকাতে। বাংলার মানুষের জবাব দেওয়ার সময় এসেছে। পুলিশ দিয়ে আন্দোলন থামানোর চেষ্টা হয়েছে। এরই প্রতিবাদে বুধবার ১২ ঘণ্টা বনধের ডাক দেওয়া হয়েছে।'
অভিযোগ উড়িয়ে তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ অবশ্য বলেন, 'মানুষ সবই দেখেছেন। সকাল থেকে পুলিশকর্মীরা বারে বারে আক্রান্ত হয়েছেন। তবু আন্দোলনকারীদের শান্ত করার চেষ্টা করে গেছেন। আন্দোলনের নামে গুন্ডামি করা হল। কোথায় পড়ুয়া? অধিকাংশই তো মাঝবয়সী। জাতীয় পতাকা হাতে নিয়ে অশান্তি তৈরির এই প্রচেষ্টা বাংলার মানুষ বরদাস্ত করবে না।'
এদিকে বিজেপির ডাকা এই ধর্মঘট কোনওভাবে মানা হবে না বলে এদিন জানিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, 'আজ মহানগরী তথা বাংলাকে স্তব্ধ ও অচল করার যে প্রয়াস হচ্ছে, তা অসমর্থনযোগ্য। আগামিকালের প্রস্তাবিত ধর্মঘটকে মেনে নেওয়া হবে না। তাই অংশ নেবেন না। সব কিছু চালু থাকবে। অফিস-কাছারিতে আসতে হবে সরকারি কর্মীদের। দোকানপাট খুলে রাখবেন। যানবাহন স্বাভাবিক রাখতে হবে। বাংলাকে সর্বতভাবে সচল রাখতে হবে।'
এদিকে, নবান্ন অভিযান কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া যেসব নির্দোষ আন্দোলনকারীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে তাদের অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে এদিন বিকালে লালবাজার অভিযানে নামে বিজেপি নেতৃত্ব, সেখানে দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার সহ বিভিন্ন স্তরের নেতা-নেত্রীরা উপস্থিত ছিলেন।
এই অভিযানকে ব্যর্থ করতে লালবাজারের অদূরেই ব্যারিকেড কে বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়। পুলিশের পক্ষ থেকে আন্দোলনকারীদের উদ্দেশ্যে বলা হয়, অবিলম্বে এই স্থান ত্যাগ করতে। কিন্তু তারপরেও আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ায় পুলিশ একসময় আন্দোলনকারীদের উদ্দেশ্যে পর পর বেশ কয়েকটি টিয়ার গ্যাসের সেল ফাটায়। আর তাতেই অসুস্থ হয়ে পড়েন সুকান্ত মজুমদার সহ অনেকেই। এর পরেই সুকান্ত মজুমদারকে সেখান থেকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত উত্তপ্ত রয়েছে কলকাতা শহরের নানা স্থান।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন