Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

মঙ্গলবার, ৬ আগস্ট, ২০২৪

‌প্রাণ হাতে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় আওয়ামী লিগ কর্মীর

Awami-League-workers

সমকালীন প্রতিবেদন : ‌চোখেমুখে আতঙ্কের ছাপ তখনও স্পষ্ট। যেন নতুন করে জীবন ফিরে পেলেন। এযাত্রায় আপাতত নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে যেন মুক্তি মিললো। তবে পরিবারের বাকি সদস্যদের কি হবে, তা এখনও অজানা। মঙ্গলবার দুপুরে বেনাপোল থেকে পেট্রাপোল সীমান্তে পা রেখে এমনই প্রতিক্রিয়া দিলেন বাংলাদেশের আওয়ামী লিগ কর্মী বিশ্বজিৎ সাহা।

কোটা সংরক্ষণকে ঘিরে আন্দোলনের জেরে তৈরি হওয়া বাংলাদেশের পরিস্থিতি আস্তে আস্তে ঘোরালো হতে থাকে। পরে তা অন্যদিকে মোড় নেয়। আর যার পরিনতি শেখ হাসিনার পদত্যাগ এবং শেষে দেশত্যাগ। প্রাণে বাঁচতে তিনি দেশত্যাগ করলেও এই মুহূর্তে যথেষ্ট বিপদের মুখে বাংলাদেশের আওয়ামী লিগের নেতা, কর্মীরা।

ইতিমধ্যেই সেদেশে আওয়ামী লিগের বহু কার্যালয়ে ভাঙচুর, আগুন লাগিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। একাধিক আওয়ামী লিগ নেতা আক্রান্ত, নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার দুপুরে দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়ার জন্য ঢাকা বিমানবন্দরে পৌঁছাতেই সেদেশের সদ্য প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী, টেলি যোগাযোগমন্ত্রী সহ তিনজনকে আটক করেছে সেদেশের সেনাবাহিনী।

এদিকে, বিপদ যে ঘনিয়ে আসতে পারে, তা বেশ কিছুদিন আগে থেকেই আঁচ করতে পারছিলেন বাংলাদেশের বাগেরহাট জেলার বাসিন্দা, আওয়ামী লিগ কর্মী বিশ্বজিৎ সাহা। আর তাই সময় থাকতে থাকতে আগেভাগেই ভারতে যাওয়ার ভিসা করিয়ে রেখেছিলেন তিনি।

অবশেষে তাঁর আশঙ্কাই সত্যি হলো। পেশায় মুদি দোকানদার সোমবার সকাল থেকেই বিপদের আঁচ পান। এদিন বাংলাদেশ জুড়ে যখন তোলপাড় শুরু হয়েছে, তখন তাঁর এলাকার কয়েকজন আওয়ামী লিগ কর্মীর দোকান, বাড়িতে হামলা, অগ্নি সংযোগ, লুঠপাঠের ঘটনা ঘটতে শুরু করে।

এর রেশ তাঁর উপরেও পড়তে পারে আঁচ করে সোমবার রাতেই পরিবার, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ছেড়ে রাতেই একটি জামাকাপড় সম্বল করে বাড়ি ছাড়েন বিশ্বজিৎবাবু। সারারাত জঙ্গলে লুকিয়ে থেকে ভোররাতে বেনাপোলের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। অবশেষে ইমিগ্রেশনের পর্ব সেরে পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে যখন ভারতীয় ভূখন্ডে পা রাখলেন, তখন হাফ ছেড়ে বাঁচলেন তিনি।

পেট্রাপোল সীমান্তে দাঁড়িয়ে সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলার সময় তখনও তাঁর চোখেমুখে আতঙ্কের ছাপ স্পষ্ট। প্রাণ হাতে করে সারারাত জঙ্গলে লুকিয়ে থেকে অবশেষে নিরাপদে ভারতে প্রবেশ করতে পেরে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে তাঁর মনে।

জানালেন, ৪ মাসের ভিসা নিয়ে তিনি ভারতে এসেছেন। যতদিন না বাংলাদেশের পরিস্থিতি স্বভাবিক হচ্ছে, ততদিন এখানে বিভিন্ন আত্মীয়বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে থাকবেন। তবে নিজে পালিয়ে বাঁচলেও বাংলাদেশে অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলে আসা পরিবারের অন্যান্য সদস্য, নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ভবিষ্যৎ কি, তা জানা নেই তাঁর। 




কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন