সমকালীন প্রতিবেদন : গোটা সৌরজগত এই নক্ষত্রকে কেন্দ্র করে টিকে রয়েছে। পৃথিবীর সব প্রাণীর ভবিষ্যৎও প্রত্যক্ষভাবে এই একটি নক্ষত্রের উপর নির্ভরশীল। আর এই নক্ষত্র হল সূর্য, যাকে জয় করতে সম্প্রতি আদিত্য নভোযানকে পাঠিয়েছে ভারত। কিন্তু এই সূর্যের জন্ম কিভাবে? কিভাবেই বা এটি এত শক্তি ছড়ায়? আর কতদিন বাঁচবে আমাদের এই নক্ষত্র?
বিজ্ঞানীদের গবেষণা বলছে যে, ধ্বংস হয়ে যাওয়া নক্ষত্রের বিভিন্ন উপাদান থেকে জন্ম হয়েছে সূর্যের। কোনো নক্ষত্র ধ্বংস হলে, বিস্তৃত অঞ্চলে ছড়িয়ে যায় গ্যাসের মেঘ। তবে একপর্যায়ে মহাকর্ষীয় আকর্ষণে ফের ঘণীভূত হয় এই মেঘ।
সেই সঙ্গে স্ফীত হয় মেঘের কেন্দ্র। আশপাশ অঞ্চলের নানা পদার্থও যুক্ত হয়, আর গড়ে ওঠে নতুন নক্ষত্র। মহাবিশ্বের দ্বিতীয় পর্যায়ের নক্ষত্র সূর্যের জন্মও একইভাবে। অর্থাৎ, বিগ ব্যাং-এর পর বিস্তৃত মহাবিশ্বে প্রথম প্রজন্মের কোনো নক্ষত্র নয় সূর্য।
মহাকাশবিজ্ঞানীরা বলছেন, পৃথিবীকে আলোকিত করে রাখা সূর্যের বয়স প্রায় ৪৬০ কোটি বছর। নক্ষত্রের ভেতরে অনবরত চলে গ্যাসের নানান বিক্রিয়া, সূর্যের ক্ষেত্রে এই বিক্রিয়া হাইড্রোজেনকে হিলিয়াম গ্যাসে রূপান্তর করে অফুরন্ত শক্তি উৎপাদন করে।
আর এই শক্তিই আলো ছড়াচ্ছে পৃথিবীতে, তৈরি করেছে প্রাণের উপযুক্ত পরিবেশ। তবে এই নক্ষত্রের কিন্তু শেষ পর্যন্ত মৃত্যু হবে। এটি ক্রমাগত আরও বেশি উত্তপ্ত হতে থাকবে এবং তার পরে ধীরে ধীরে হাইড্রোজেন ফুরিয়ে যাবে।
আরও বেশি হাইড্রোজেন টানার জন্য, কেন্দ্রটি সংকুচিত হবে। কেন্দ্রটি সংকুচিত হলে স্বাভাবিক নিয়মেই সূর্যের বাইরের আস্তরণ প্রসারিত হবে। এই আস্তরণ ক্রমশ পৃথিবীকে গিলে ফেলবে এবং এমনকী মঙ্গলকেও গ্রাস করবে। আস্তে আস্তে সূর্য একটি লাল রঙের বিশালাকার নক্ষত্রে পরিণত হবে।
তার পরে ক্রমে কমতে থাকবে এর তাপমাত্রা এবং বাইরের অংশ নীহারিকা গঠন করবে। তার পরে এক সময়ে পুরোটাই ঠান্ডা হতে থাকবে। আর শেষ পর্যন্ত সূর্য একটি ঠান্ডা, ছোট এবং সাদা রঙের বামন নক্ষত্রে পরিণত হবে।
আনুমানিক ৮০০ কোটি বছর বয়সে সূর্য সর্বোচ্চ তাপমাত্রায় পৌঁছবে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। তার পরে এটির তাপমাত্রা কমতে থাকবে এবং একটি বিশালাকার লাল তারকাতে পরিণত হবে। ১ হাজার থেকে ১১ হাজার কোটি বছর বয়সের মধ্যে সূর্যের মৃত্যু হবে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন