সমকালীন প্রতিবেদন : ২০২২ সালের ৩০ ডিসেম্বর গাড়ি দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন ভারতের তরুণ উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান ঋষভ পন্থ। তারপর জীবন-মৃত্যুর মধ্যে চলেছে দীর্ঘ লড়াই। একটা সময় হাঁটতে পারতেন না। জনসমক্ষে আসতে ভয় পেতেন। আদৌ মাঠে ফিরতে পারবেন তো? এই সংশয় তাঁকে কুঁড়ে কুঁড়ে খেয়েছে প্রতিদিন।
তবে সেই ঋষভ পন্থ আজ বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েছেন। রোহিত-বিরাটদের দলের এই বেপরোয়া ব্যাটারের মাথায় উঠেছে বিশ্বজয়ের খেতাব। এককথায় মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসে বিশ্বজয় করেছেন ঋষভ। প্রত্যেকের জীবনে একটা বড় অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছেন তিনি। কিন্তু কিভাবে?
দেড় বছর আগের সেই দুর্ঘটনা অনেক কিছু শিখিয়েছে পন্থকে। মৃত্যুমুখ থেকে ফিরে এসেছেন তিনি। শিখেছেন লড়াই করতে। ওই দুর্ঘটনার পর নিজের মুখেই বলেছিলেন, 'লোকে আমাকে হুইলচেয়ারে বসে থাকতে দেখবেন, সেটা ভাবলেই ঘাবড়ে যেতাম। টানা দু-মাস দাঁত পর্যন্ত মাজতে পারিনি। আর গত ছয় মাস অসহ্য শারীরিক যন্ত্রণার সঙ্গে আমাকে লড়াই করে যেতে হয়েছে।'
তবে সে লড়াই শুধু শারীরিক যন্ত্রণার বিরুদ্ধে নয়। লড়াই ছিল মানসিক যন্ত্রণার বিরুদ্ধেও। লড়াইটা জিতে গিয়েছেন ঋষভ পন্থ। হয়তো বিশ্বকাপে নিজের সেরাটা দিতে পারেননি। পুরনো পন্থের ঝলক দেখা গেলেও ধারাবাহিকতার অভাব চোখে পড়েছে।
কিন্তু পন্থ তো বরাবরই এমন। তিনি দলে থাকলে মাতিয়ে রাখেন গোটা ড্রেসিংরুম। উইকেটের পিছনে থেকে তাতিয়ে রাখেন বোলারদের। এবারেও সেটা করেছেন। বহুবার দেখা গিয়েছে বোলারদের পরামর্শ দিতে।
বিশ্বকাপে নেমে নজিরও গড়েছেন পন্থ। ২০২৪ এর বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি উইকেট নেওয়ার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রয়েছে টিম ইন্ডিয়ার এই উইকেটরক্ষকের। আগে এই রেকর্ড ছিল অ্যাডাম গিলক্রিস্টের দখলে।
আর দলের ব্যাটিং বিভাগে তাঁর উপস্থিতি নতুন দিগন্ত খুলে দেয়। বাঁহাতি পন্থ ব্যাট করেন নির্ভয়ে। বিশ্বকাপের শুরুটা ব্যাট হাতে ভালোই করেছিলেন তিনি। আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৩৬ রান, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ৪২ রান এবং সুপার এইটে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে করেন ২০ রান।
পরের দিকে ব্যাট হাতে তেমন সাফল্য না পেলেও পন্থের উপস্থিতি বরাবরই ভরসা জুগিয়েছে টিম ইন্ডিয়াকে। আসলে জীবনযুদ্ধে বেঁচে ফেরার যে লড়াই, সেটা উদ্বুদ্ধ করেছে পন্থকে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন