সমকালীন প্রতিবেদন : অলিম্পিকের মতো বড় মঞ্চ মনু ভাকের গর্বিত করেছেন গোটা ভারতকে। গতবার টোকিয়োতে মীরাবাই চানুর হাতে পদকের শুরু হয়েছিল ভারতের। আর এবারেও আর এক মহিলার হাত ধরে অলিম্পিক্সের পদক অভিযান শুরু করল ভারত।
যদিও তিন বছর আগে পরিস্থিতিটা সম্পূর্ণ ভিন্ন ছিল এই তরুণীর কাছে। সেই সময় একদিকে যেমন মনুর সবচেয়ে প্রিয় বন্ধু তাঁকে ধোঁকা দেয়, তেমনই আবার বিদ্রোহ করে বসে তাঁর হাতিয়ার। বন্দুক খারাপ হয়ে যাওয়ায় যোগ্যতা অর্জন পর্ব শেষ করতে পারেননি মনু।
টোকিয়ো থেকে ফিরে কোচ যশপাল রানার সঙ্গে ঝামেলায় জড়িয়েছিলেন মনু। এশিয়ান গেমসে সোনাজয়ী ভারতের প্রাক্তন শুটারের অধীনে তিনি থাকবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন।
মনুর এই মেজাজ তাঁকে বার বার সমস্যায় ফেলেছে। কিন্তু ধীরে ধীরে তিনি বুঝতে পেরেছেন যে, মেজাজ তাঁর আরও বিপদ ডেকে আনছে। তাই যশপালের সঙ্গে কথা বলে সমস্যা মেটান। এবার টোকিয়োয় যখন মনু ফাইনালে উঠেছেন, তখন যশপালের চোখে জল।
শিষ্যার সাফল্যে গুরু কেঁদেছেন। তার মধ্যে অনেক পরিশ্রম, অনেক ঘাম-রক্তের স্বাদ রয়েছে। কিন্তু টোকিয়ো যাঁকে অন্ধকারে নিক্ষেপ করেছিল, তিনি কীভাবে আলোয় ফিরলেন? পদক জেতার পরে মনু সাংবাদিকদের কাছে সেই রহস্য ফাঁস করেছেন।
আসলে তাঁর সাফল্যের সিক্রেট হল ভগবদ্গীতা। মাথা ঠান্ডা করতে তাঁকে বারবার সাহায্য করে গীতাপাঠ। এককথায়, গীতার মন্ত্রেই অর্জুনের মতো লক্ষ্যভেদ করে গেলেন তিনি। মনু এখানেই থামেন নি। ১০ মিটার এয়ার পিস্তলের মিক্সড ইভেন্টে ব্রোঞ্জ জিতল ভারত। দ্বিতীয় পদক পেলেন মনু ভাকের। এই ইভেন্টে মনুর সঙ্গে ব্রোঞ্জ পদক পেলেন সরবজ্যোৎ সিং।
পদকের স্বাদ পেয়েছেন এই অলিম্পিক্সে। আরও পদক জিততে চাইবেন মনু। টোকিয়োর কান্নাকে আপাতত নদীর জলে ফেলে এসেছেন তিনি। তাই আপাতত থামতে চাইছেন না মনু। অতীত ভুলে এগিয়ে যেতে চাইছেন। গত তিন বছরে জীবনটাই বদলে গিয়েছে মনুর।
এখন শুধু পাখির চোখ দেখেন তিনি। নিজের কাজ করে যেতে চান। পরিশ্রম করে যেতে চান। তিনি জানেন, পরিশ্রম করলে সফল হবেনই। প্যারিসে দ্বিতীয় দিনেই সেটা শুরু হয়েছে। পিস্তল হাতে স্বপ্ন দেখাচ্ছেন হরিয়ানার ২২ বছরের তরুণী।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন