সমকালীন প্রতিবেদন : শুক্রবার ভোরে শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করলেন উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সিপিএমের বরিষ্ঠ নেতা রনজিৎ মিত্র। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর। তাঁর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই শোকের ছায়া নেমে আসে জেলার বাম মনোভাবাপন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মী, সমর্থকদের মধ্যে।
১৯৪০ সালে তৎকালীন পূর্ববঙ্গের খুলনা জেলায় জন্ম রনজিৎ মিত্রের। পরবর্তীতে পরিবারের সঙ্গে এপার বাংলায় চলে আসেন। বনগাঁর খয়রামারি এলাকায় তাঁর আদি বাড়ি হলেও পরবর্তীতে তিনি নিউ ব্যারাকপুর এলাকায় পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন। আর সেখান থেকেই রাজনৈতিক কর্মকান্ড পরিচালনা করতেন।
১৯৭৭ এবং ১৯৮৭ সালে তিনি বনগাঁ কেন্দ্র থেকে সিপিআইএম প্রার্থী হিসেবে জয়ী হয়ে বিধায়ক হন। দলের পক্ষ থেকে বনগাঁ মহকুমার দায়িত্ব ছিল তাঁর উপর। তাঁর হাত ধরে অনেকেই রাজনৈতিক পরিমন্ডলে প্রবেশ করেছেন। একসময় বনগাঁ মহকুমায় তিনিই ছিলেন দলের শেষ কথা।
বনগাঁ দীনবন্ধু মহাবিদ্যালয়ে ছাত্র আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে রনজিৎ মিত্রের রাজনীতির হাতেখড়ি। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে সিপিএম তথা বামফ্রন্টের বহু নামী নেতার সান্নিধ্যে এসেছেন তিনি। একসময় সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য ছিলেন। রাজনৈতিক জীবনে তাঁর সততা অনেককেই অনুপ্রাণিত করেছে।
দীর্ঘ বছর তিনি সিপিএমের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য ছিলেন। কৃষক সভার সর্বভারতীয় নেতা রনজিৎ মিত্র কৃষক সভার রাজ্য কমিটির সহ সভাপতি ছিলেন। দীর্ঘদিন ধরে দায়িত্ব সামলেছেন কৃষক সভার উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদকের পদ।
১৯৫৫ সালে অবিভক্ত কমিউনিষ্ট পার্টির সদস্য পদ পাওয়া রনজিৎ মিত্র ১৯৫৬ সালে খাদ্য আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে কারাবরণ করেন। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে তিনি মোট ৩ বার কারাবরণ করেন। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ থেকে ভারতে আসা উদ্বাস্তু মানুষদের জন্য বনগাঁয় শিবির তৈরি করে তাদের আশ্রয় এবং চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। সেইসময় সেই শিবির পরিদর্শনে আসেন লক্ষ্মী সায়গলের মতো ব্যক্তিত্ব।
শুক্রবার ভোর সাড়ে ৫ টা নাগাদ শৌচাগার থেকে ফিরেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে নিউ ব্যারাকপুরের বাড়িতেই শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন। এদিন বাড়ি থেকে তাঁর মরদেহ প্রথমে জেলা পার্টি অফিস, তারপর কৃষকসভার অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানান জেলা ও রাজ্যের বাম নেতানেত্রীরা।
সেখান থেকে তাঁর মরদেহ বনগাঁর বাড়ি হয়ে বনগাঁর দলীয় কার্যালয়ে আনা হয়। সেখানে শ্রদ্ধা জানানোর পাশাপাশি চাঁদপাড়া পার্টি অফিস পর্যন্ত একটি শোক মিছিল বের করা হয়। অবশেষে এদিন অপরাহ্নে সাজিরহাট মহা শ্মশানে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।
Aman akjan Manush jake dekhle sradha hai.
উত্তরমুছুন