সমকালীন প্রতিবেদন : ভারতীয় ফুটবলের আরও এক সোনালী অধ্যায়ের সমাপ্তি। অবসর নিচ্ছেন কিংবদন্তি ফুটবলার সুনীল ছেত্রী। বৃহস্পতিবার একটি ভিডিও বার্তায় অবসরের কথা জানিয়েছেন খোদ সুনীলই। তিনি ওই ভিডিওতে বলেছেন যে, ফুটবল জীবনের শেষ ম্যাচ তিনি খেলবেন কলকাতায়।
আগামী ৬ জুন কলকাতার যুবভারতী স্টেডিয়ামে কুয়েতের বিরুদ্ধে বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জন পর্বের ম্যাচ রয়েছে ভারতের। সেই ম্যাচই সুনীল ছেত্রীর শেষ ম্যাচ হতে চলেছে ভারতীয় নীল জার্সি গায়ে। সেই ভিডিও বার্তা এখন ছড়িয়ে পড়েছে সমাজমাধ্যমে।
এক ভিডিও বার্তায় তিনি জানিয়েছেন, 'প্রথম যখন দেশের জার্সি গায়ে চাপিয়েছিলাম, তার অনুভূতি অন্যরকম ছিল। যখন প্রথম একাদশে সুযোগ পাই, সেই অনুভূতি ছিল অবিশ্বাস্য। ভারতীয় দলে আমার শুরুর দিকের যাত্রা কিছুতেই ভুলতে পারব না।'
২০০৫ সালের জুন মাসে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রথমবার দেশের জার্সিতে খেলতে নামেন সুনীল ছেত্রী। সেই শুরু। তারপর একে একে মনে রাখার মতো ম্যাচ উপহার দিয়েছেন তিনি ভারতীয় ফুটবল মহলকে।
বাইচুং ভুটিয়ার পর আরও এক লেজেন্ড স্ট্রাইকারকে পেয়েছিল দেশ। স্টিফেন কন্সট্যান্টাইন থেকে শুরু করে ভারতের বর্তমান কোচ ইগর স্টিমাচ কেউই সুনীল ছাড়া প্রথম একাদশ সাজাতে পারেন না।
দীর্ঘ কেরিয়ারে কত ফুলই না ফুটিয়েছেন সুনীল ছেত্রী। দেশের জার্সিতে গোলসংখ্যার দিক থেকে ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো, লিওনেল মেসির সঙ্গে একই নিঃশ্বাসে উচ্চারিত হতো ভারতের সুনীলের নাম।
১৫০ ম্যাচে ৯৪ গোলের অবিশ্বাস্য রেকর্ড রয়েছে তাঁর। অভিষেক ম্যাচে গোল করেছিলেন। প্রতিটি মাইলস্টোনের ম্যাচে গোল রয়েছে সুনীলের। দেড়শো-তম ম্যাচেও গোল করেন। দিন যত এগিয়েছে সুনীল ততই পরিণত হয়েছেন।
সেই সুনীলই দেশের হয়ে আর খেলতে নামবেন না, এটা ভারতীয় ফুটবল প্রেমীদের জন্য ভীষণ খারাপ খবর।ক্রিকেটশাসিত পৃথিবীতে সুনীলের অবদান অতি মূল্যবান। তাঁর অবসর ভারতীয় ফুটবলের এক গর্বিত অধ্যায়ের সমাপ্তি। কিন্তু সুনীলের পর ভারতীয় ফুটবলে কে উঠে আসবেন?
হয়তো সেই নামটাই এখনো তৈরি হয়নি। গতবছর ভুবনেশ্বরে আন্তঃমহাদেশীয় কাপ খেলতে যাওয়ার আগে সুনীল বলেছিলেন, 'আমি তো জীবাশ্ম হয়ে গিয়েছি। ঠিক এই কারণে আপনি আমার কোনও বিকল্প খুঁজে পাবেন না। সরাসরি আমার উত্তরসূরী এখন খুঁজে পাবেন না।' সুনীল খুব ভালো করেই জানেন যে, তাঁর মতো আর কেউ নেই।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন