Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

শুক্রবার, ১৭ মে, ২০২৪

জন্ম থেকেই দু'টি হাত নেই, পা দিয়েই গাড়ির স্টিয়ারিং ধরেন এই তরুণী

 

Drive-with-legs

সমকালীন প্রতিবেদন : জন্ম থেকেই তাঁর নামের সঙ্গে জুড়ে গিয়েছিল 'বিশেষভাবে সক্ষম' শব্দদুটি। বিরল অসুখের কারণে দুটি হাতই নেই। তবু হাল ছাড়েননি তিনি। পড়াশোনা করেছেন, ডিজাইনিং শিখেছেন। তাই শারীরিক প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও শহরের অন্যতম বড় শিল্প প্রকাশনা সংস্থায় গ্রাফিক্স ডিজাইনার পদে কর্মরত। 

তবে এর মাঝে তাঁর মনে ডানা মেলছিল অন্য এক স্বপ্ন। আর সেটা ছিল গাড়ি চালানোর স্বপ্ন। হাত নেই তো কী হয়েছে, পা-ই যথেষ্ট! অদম্য উৎসাহে গাড়ি চালানো শিখেছেন। কিন্তু লাইলেন্স পাচ্ছিলেন না। তবে ৬ বছর ধরে সেই অধিকার প্রাপ্তির লড়াইয়ের অবসান হয়েছে কয়েকমাস আগেই। 

কেরলের তরুণী জিলুমল ম্যারিয়েত থমাস এখন ভারতের নয়, সমগ্র এশিয়ার প্রথম মহিলা, যিনি হাত না থাকা সত্ত্বেও গাড়ি চালানোর আইনি ছাড়পত্র পেয়েছেন। জিলুমল কেরলের ইদুক্কি জেলার বাসিন্দা। জন্ম থেকে হাত-বিহীন জিলুমলকে ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদান করেছেন স্বয়ং কেরলের মুখ্যমন্ত্রী। 

কয়েক বছর আগে জিলুমলের বাবা-মা মারা যান। তারপর থেকেই তিনি স্বাবলম্বী হওয়ার লক্ষ্যে গাড়ি চালানো শেখা শুরু করেন। হাত না থাকায় পা দিয়েই স্টিয়ারিং ধরেন এবং গিয়ার পাল্টান জিলুমল। এছাড়া ইন্ডিকেটর, হেডল্যাম্পস এবং ওয়াইপার ব্যবহার করার জন্য ভয়েজ কমান্ড সিস্টেম ব্যবহার করেন তিনি। 

কোচির একটি বেসরকারি সংস্থা তাঁর ব্যবহারের উপযোগী করে গাড়িটিতে বেশ কিছু পরিবর্তন করে দিয়েছিল, তার ফলে পা দিয়ে স্টিয়ারিং হুইল ঘুরিয়ে গাড়ি চালাতে সমস্যা হয় না জিলুমলের। তবে লাইসেন্স পাওয়ার পথ খুব একটা মসৃণ ছিল না তাঁর কাছে। 

গত ৬ বছর ধরে লড়াই চলছিল। ভাদুথালার মারিয়া ড্রাইভিং স্কুলে গাড়ি চালানো শেখার পর লাইসেন্সের জন্য ইদুক্কি জেলার থুদুপুজা আরটিও-তে আবেদন করেন জিলুমল। কিন্তু আরটিও আধিকারিকরা তাঁর আবেদন খারিজ করে দেন। 

এরপর নিজের অধিকার আদায়ে কেরল হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন তরুণী। আদালতের হস্তক্ষেপের পর জিলুমল একটি পরীক্ষায় অংশ নেন এবং এমভিডি কর্মকর্তাদের সামনে তাঁর জন্য বিশেষভাবে পরিবর্তিত একটি গাড়ি চালিয়ে দেখান। 

কিন্তু আবারও তাঁর আবেদন খারিজ হয়ে যায়। অবশেষে তিনি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য রাজ্য কমিশনের কাছে যান। এরপর কমিশনের হস্তক্ষেপেই শেষমেশ লাইসেন্স পান তিনি। হয়তো একেই বলে জেদের বশে স্বপ্নপূরণ করা। 





কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন