সমকালীন প্রতিবেদন : বিশ্বব্যাপী করোনা অতিমারিকে ঠেকাতে ভরসা ছিল ভ্যাকসিনই। সেই সময়ই ত্রাতা হয়েছিল অ্যাস্ট্রাজেনেকা ও অক্সফোর্ড এর যৌথ উদ্যোগে তৈরি একটি ভ্যাকসিন। ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট সেই ফর্মুলায় তৈরি ভ্যাকসিন 'কোভিশিল্ড' নামে বাজারে এনেছিল।
এবার সেই কোভিশিল্ডের নামেই উঠল ভয়ঙ্কর অভিযোগ। আর সেই অভিযোগের দায় স্বীকার করল অ্যাস্ট্রাজেনেকা সংস্থাটি। গত ফেব্রুয়ারিতে আদালতে জমা দেওয়া এক নথিতে ওই সংস্থা জানিয়েছিল, তাদের তৈরি করা প্রতিষেধকের কারণে বিরল রোগ ‘থ্রম্বোসিস উইথ থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া সিনড্রোম’ -এ আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি আছে।
এই রোগে আক্রান্ত হলে রক্তে অণুচক্রিকার পরিমাণ কমে যায় এবং রক্ত জমাট বাঁধে। এরপরই শোরগোল পড়েছে গোটা বিশ্বজুড়ে। ঘটনার সূত্রপাত, ২০২১ সালে। জেমি স্কট নামে এক ব্যক্তি এই সংস্থার ভ্যাকসিন নেওয়ার পর থেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বেঁধে যায় তাঁর।
এর পর আরও অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। বিজ্ঞানীরা বলছেন যে, টিটিএস বা থ্রম্বোসিস উইথ থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া সিনড্রোম হলেই শরীরের নানা স্থানে রক্ত জমাট বাধতে থাকে। পাশাপাশি, রক্তে প্লেটলেটের সংখ্যা কমায় ফ্যাকাশে দেখাতে পারে শরীর।
প্রথমে মাথাব্যথা, পেটে ব্যথা, পায়ে ফোলাভাব, শ্বাস নিতে সমস্যা, চিন্তাভাবনায় ছেদ এবং হাত পা কাঁপার মতো সমস্যা দেখা যায়। গবেষকদের মতে, সব সময় যে ভ্যাকসিন থেকেই থ্রম্বোসিস হয় তা নয়, নন ভ্যাকসিন থ্রম্বোসিসও রয়েছে। যেমন সার্জারি হলে অনেকক্ষেত্রে থ্রম্বোসিসের সমস্যা হয়।
এছাড়াও, যারা ধূমপান করেন বা অতিরিক্ত ওজনজনিত সমস্যায় ভোগেন, তাঁদের ক্ষেত্রেও থ্রম্বোসিস হয়। কিন্তু টিটিএস - এই বিরল রোগে রক্ত জমাট হওয়ার পদ্ধতিটি আলাদা। তবে গবেষকরা মনে করছেন, কোভিশিল্ড দেওয়ার পর ঠিক কীভাবে এই বিরল রোগটি হচ্ছে, তা এখনই বুঝতে পারা যাচ্ছে না।
তবে এখন কার্যত তীরে এসে ডুবল কোভিশিল্ড প্রস্তুতকারী সংস্থার তরী। আদালতে স্বীকার করে নিতে বাধ্য হল যে, তাদের তৈরি প্রতিষেধকে কঠিন রোগের ঝুঁকি আছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন