সমকালীন প্রতিবেদন : শনিবার সন্ধেয় ঠাকুরনগর ঠাকুরবাড়িতে হামলার ঘটনায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর সহ মোট ১৪ জনের বিরুদ্ধে এবং এফআইআর দায়ের হলো। তৃণমূলের রাজ্যসভার সংসদ মমতা ঠাকুর গাইঘাটা থানায় এই অভিযোগ দায়ের করলেন।
অভিযোগ, এদিন সন্ধে নাগাদ ঠাকুরবাড়িতে বড়মার বাসস্থানে কলাপসিবলের গেটের তালা ভেঙে সেই ঘরের দখল নেয় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর এবং তাঁর অনুগামীরা। মমতা ঠাকুরের অভিযোগ, তাঁর ওপরেও হামলা চালানো হয়েছে। বাধা দিতে গিয়ে আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন মতুয়া ভক্ত।
সাংবাদিকদের কাছে মমতা ঠাকুর অভিযোগ করেন, 'সামনের মূল গেট খোলা থাকলেও অন্য গেটের তালা জোর করে ভাঙেন শান্তনু ঠাকুর এবং তাঁর অনুগামীরা। একইসঙ্গে অত্যন্ত অশ্লীল ভাষায় হুমকি দেওয়া হয়। এমনকি প্রাণে মেরে ফেলার, ঠাকুরবাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়।'
সন্ধের এই ঘটনার রেশ চলে মধ্যরাত পর্যন্ত। গোটা ঘটনার কথা লিখিত আকারে এদিন গভীর রাতে গাইঘাটা থানায় জানান সংসদ মমতা ঠাকুর। তিনি ঠাকুরবাড়িতে সন্তানদের নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেছেন। পাশাপাশি, গোটা ঘটনার বিচার মতুয়া ভক্তদের উপর ছেড়ে দিয়েছেন তিনি।
গাইঘাটা থানায় অভিযোগ দায়ের করার সময় মমতা ঠাকুরের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন বনগাঁর তৃণমূল প্রার্থী বিশ্বজিৎ দাস। তিনি বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী যেখানে মহিলাদের সুরক্ষার কথা বলছেন, সেখানে মমতা ঠাকুরের মতো একজন বিধবা মহিলার উপর বিজেপির একজন মন্ত্রী যেভাবে অত্যাচার করছেন, তা অত্যন্ত লজ্জাজনক। একজন সাংসদের যদি এই পরিস্থিতি হয়, তাহলে সাধারণ মানুষের কি হবে।'
রবিবারের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার বিকেলে ঠাকুরবাড়িতে বিক্ষোভ মিছিলে শামিল হবেন মতুয়া ভক্তরা। প্রয়োজনে লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া হবে বলে জানিয়েছেন মমতা ঠাকুর। বিচার ব্যবস্থার ওপর আস্থা রেখে এই হামলার বিরুদ্ধে রাজনৈতিকভাবে তিনি লড়াই চালিয়ে যাবেন বলে মমতা ঠাকুর জানিয়েছেন।
পাল্টা আন্দোলনের হুমকি দিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর জানান, 'বড়মা বীণাপাণি দেবী সম্পর্কে তাঁর ঠাকুমা। তিনি যে ঘরে থাকতেন, সেই ঘরের সঙ্গে তাঁর ছোটবেলার নানা স্মৃতি জড়িয়ে আছে। তাঁর পরিবারের সদস্যদেরও অধিকার আছে ওই ঘরে প্রবেশ করার। কিন্তু সেই অধিকার এতোদিন জোর করে আটকে রেখে দেওয়া হয়েছিল।'
উল্লেখ্য, ঠাকুরবাড়িতে মঞ্জুলকৃষ্ণ এবং কপিলকৃষ্ণ ঠাকুরের পরিবারের মধ্যে বিবাদ দীর্ঘদিনের। আর সেই বিবাদ মাঝেমধ্যেই চরম আকার ধারণ করে। যেমন ঘটলো রবিবার সন্ধেয়। আর এই ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই দ্বিধা বিভক্ত সাধারণ মতুয়া ভক্তরা। আগামীদিনে এই ঘটনার রেশ কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, সেটাই এখন দেখার।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন