সমকালীন প্রতিবেদন : প্রাচীন আমলে তৈরি নানা স্থাপত্য এখনো একইভাবে সদর্পে দাঁড়িয়ে রয়েছে মাটির বুকে। রাজ্যের নানা ঐতিহাসিক স্থানের মধ্যে অন্যতম হল বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুর। এটিকে প্রাচীন নগরী বললেও খুব একটা ভুল হবেনা। কারণ, প্রাচীনকালে তৈরি নগরের নানা চিহ্ন এখনো রয়ে গেছে বিষ্ণুপুরের মাটিতে।
সেই কারণেই প্রতি বছর রাজ্যের নানা প্রান্ত থেকে, এমনকি দেশবিদেশের নানা প্রান্ত থেকেও হাজার হাজার পর্যটক এই শহরে ভিড় জমান। বিষ্ণুপুর শহরে একাধিক দর্শনীয় স্থান রয়েছে। মূলত টেরাকোটা নির্মিত বেশ কিছু প্রাচীন মন্দির এখনো রয়েছে এই শহরে।
যেমন রাসমঞ্চ, জোড় বাংলো, শ্যমরায় মন্দির, মদনমোহন মন্দির, লালজিউ মন্দির, গড় দরজা, জোড়া মন্দির এখানে বেশ উল্লেখযোগ্য স্থান। তবে বিষ্ণুপুরের বাইরেও রয়েছে এমন কিছু স্থান, যা দেখলে আপনার মনে পড়বে সুদূর ইতিহাসের কিছু কথা।
বলা যায়, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের একটি নিদর্শন এখনো রয়ে গেছে বিষ্ণুপুরের বুকে। এই স্থানটি সম্পর্কে অনেকেই এখনও জানেন না। বিষ্ণুপুর শহর থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরেই রয়েছে পরিত্যক্ত একটি বিমানঘাঁটি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এই বিমানঘাঁটি তৈরি করা হয়।
এখন সেই বিমানঘাঁটির কোনো চিহ্ন না থাকলেও, ফাঁকা স্থান এবং তার উপর মোটা কংক্রিটের রানওয়ে এখনো বিদ্যমান সেখানে। এটি পিয়ারডোবা এরোডোম নামেও পরিচিত।
এটি মূলত যুদ্ধের সময় বিমান ওঠানামা করার জন্য তৈরি করা হয়েছিল। ১৯৪৩ সালে এটিকে ভারতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সেনা বিমান বাহিনীর বোম্বার কমান্ডের বেস হিসাবে গড়ে তোলা হয়েছিল।
তবে এই এয়ারফিল্ড ১৯৪৫ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর বন্ধ হয়ে যায়। এই এয়ারফিল্ডের যুদ্ধোত্তর ইতিহাস আজ অস্পষ্ট। তবে আজও বিশাল, বিস্তৃত যুদ্ধকালীন এয়ারফিল্ডটি পরিত্যক্ত এবং বেহাল অবস্থায় রয়ে গেছে যুদ্ধের সাক্ষী হিসেবে।
এই অজানা জায়গা যাওয়ার জন্য হাওড়া থেকে বিষ্ণুপুরের ট্রেন ধরে নেমে যান বিষ্ণুপুর স্টেশনে। সেখান থেকে একটি গাড়ি ভাড়া করে নিলেই পৌঁছে যাবেন এই স্থানে। গ্রীষ্মের আগেই এই স্থান থেকে ঘুরে আসুন। কথা দিচ্ছি, হতাশ হবেন না।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন