Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

শুক্রবার, ১২ এপ্রিল, ২০২৪

সাইকেল সারাইয়ের কাজ করে, অন্যের বই পড়ে পাশ করেছেন ইউপিএসসি

 

সমকালীন প্রতিবেদন : ভারতের সবচেয়ে কঠিন চাকরির পরীক্ষাগুলির মধ্যে অন্যতম হলো ইউপিএসসি। প্রতিবছর এই পরীক্ষায় লক্ষ লক্ষ পরীক্ষার্থী বসলেও হাতেগোনা মাত্র কয়েকজনই আইপিএস বা আইএএস হয়ে নিজেদের স্বপ্ন পূরণ করেন। 

যে কারণে ইউপিএসসির লেখা পরীক্ষা বা ইন্টারভিউতে কেউ পাস করলে, তাঁকে নিয়ে রীতিমতো হইচই পড়ে যায় চারিদিকে। বলা হয়, প্রথম চেষ্টায় কেউই এই পরীক্ষায় নাকি সফল হতে পারেন না। তবে একাগ্রতা, অধ্যাবসায় এবং পরিশ্রমের দ্বারা খুব সহজেই এই পরীক্ষায় সফল হওয়া সম্ভব। 

জীবনের সঙ্গে লড়াই করে ইউপিএসসির মতো কঠিন পরীক্ষায় সফলতা পেয়েছেন এমন নজিরও কম নেই। এমন অনেক পরীক্ষার্থী রয়েছেন, যাঁরা আর্থিক প্রতিবন্ধকতার মধ্যেও আইএএস বা আইপিএস অফিসার হয়েছেন। তেমনই এক আইএএস অফিসারের গল্প শোনাবো আজ। 

বর্তমানে সেই যুবক দেশের একজন আমলা। তাঁর নাম বরুণ আগরওয়াল। মহারাষ্ট্রের পালঘর জেলার ছোট শহর বইসারের এক দরিদ্র পরিবারে জন্ম বরুণের। ছোট থেকেই আর্থিক প্রতিকূলতার মধ্যে বড় হয়েছেন বরুণ। বাবার সাইকেল মেরামতির দোকান থেকেই সংসার চলত তাঁদের। 

সন্তান যাতে ভালোভাবে পড়াশোনা করতে পারে, তার জন্য দিনরাত পরিশ্রম করতেন বরুনের বাবা। কিন্তু হঠাৎই ঘটে ছন্দপতন। দশম শ্রেণীতে পড়াকালীন বাবাকে হারান বরুণ। অর্থের অভাবে বন্ধ হয় স্কুলে যাওয়া। সংসার চালাতে দোকানের দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেন তিনি। 

তবে মনে ছিল পড়াশোনার প্রতি ভালোবাসা এবং অদম্য জেদ। তাই বাবার মৃত্যুর পর হাল না ছেড়ে টাকা জমিয়ে ভর্তি হন স্কুলে। সারাদিন স্কুল করার পর বিকেলে দোকানে এসে বসতেন তিনি। এভাবেই দশম শ্রেণী পাশ করেন বরুণ। 

তবে ছেলের পড়াশোনার প্রতি এত আগ্রহ দেখে নিজের কাঁধে দোকানের দায়িত্ব তুলে নিয়ে ছেলেকে পড়াশোনা করার সুযোগ করে দেন বরুণের মা। একাদশ শ্রেণীতে ভর্তির সময় বরুণের বাবার এক চিকিৎসক বন্ধু তাদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। বরুণের পড়াশোনার দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেন তিনি। 

দ্বাদশ শ্রেণী উত্তীর্ণ হয়ে ছোটবেলার স্বপ্নকে প্রাধান্য দিয়ে মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন বরুণ। কিন্তু মেডিকেলের পড়াশোনা খরচ সাপেক্ষ হওয়ায় ইঞ্জিনিয়ারিং-এ ভর্তি হন পুনের এমআইটি কলেজে। পড়াশোনার জন্য ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে বৃত্তি পেয়ে যাওয়ায় তাঁকে আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রী অর্জনের পরে এক বহুজাতিক সংস্থায় কাজে যোগ দেন বরুণ। তবে তাঁর ইচ্ছে ছিল সরকারি চাকরি করার। 

একপ্রকার পরিবারের সকলের বিরুদ্ধে গিয়েই মোটা বেতনের বেসরকারি চাকরি ছেড়ে দেন বরুণ। বই জোগাড় করে শুরু করেন ইউপিএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতি। এই সময় এক বেসরকারি সংস্থার সহযোগিতায় পড়াশোনা শুরু করেন তিনি। ওই সংস্থা তাঁকে ইউপিএসসি সংক্রান্ত বই দিয়ে সাহায্য করতে থাকে। 

কঠোর পরিশ্রম এবং অধ্যাবসায়ের জোরে ২০১৬ সালে প্রথম প্রচেষ্টাতেই ইউপিএসসির মতো কঠিন পরীক্ষায় ৩২ র‌্যাঙ্ক নিয়ে উত্তীর্ণ হন বরুণ। আজ তিনি দেশের একজন আইএএস অফিসার হয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব সামলাচ্ছেন।‌‌






‌‌

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন