সমকালীন প্রতিবেদন : পুরী বা দীঘার সমুদ্রে নেমে একটু গা ভেজালেও সাঁতার না জানলে জলে নামতে প্রায় সকলেই ভয় পান। নদী হোক বা সমুদ্র, সাঁতার জেনে জলে নামাটাই নিরাপদজনক। এতে ঝুঁকি অনেক কম থাকে।
তবে জানেন পৃথিবীতে এমন হ্রদ আছে, যেখানে সাঁতার না জানলেও ডুববেন না কোনো মানুষ। জলের মধ্যে ভেসে থাকতে পারবেন যে কেউ। কোথায় অবস্থিত এই হ্রদ?
মিশরের রাজধানী কায়রো থেকে ৫৬০ কিলোমিটার দূরে মিশর-লিবিয়া সীমান্ত থেকে ৫০ কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত সিওয়া মরুদ্যান। আর এই মরুদ্যানের মধ্যেই শতাধিক হ্রদের অবস্থান। শহরের কোলাহল থেকে অনেক দূরে মরুদ্যানে তালগাছ দিয়ে ঘেরা এই হ্রদগুলির গভীরতা সর্বাধিক ১৮ মিটার।
সাঁতার না জেনে এই সকল হ্রদে নামলেও ডুবে যাওয়ার বিন্দুমাত্র আশঙ্কা নেই। বরং গা ভাসিয়ে এর জলে থাকা যাবে। স্থানীয়রা মনে করেন, এই হ্রদের সঙ্গে জড়িয়ে আছে রহস্যময় এক শক্তি। স্থানীয়দের অনুমান, জলে এমন কিছু আছে, যা কঠিন রোগও সারিয়ে দিতে পারে।
তাই অসুখ করলে এই হ্রদের জলে স্নান করা তারা একপ্রকার প্রয়োজন বলেই মনে করেন। তবে বিজ্ঞানীদের দাবি, সিওয়ার এই হ্রদগুলিতে কোনো রহস্য নেই। সেখানকার হ্রদে মানুষ যে ভেসে থাকতে পারেন, তাঁর নেপথ্যে রয়েছে বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা।
বিজ্ঞানীদের দাবি, সিওয়ার হ্রদগুলিতে লবনের মাত্রা অনেক বেশি। আর ঠিক সেই কারণেই মানুষ সেখানে ডুবে যায় না। হ্রদগুলিতে প্রায় ৯৫ শতাংশেরও বেশি লবণ থাকে। তবে এই হ্রদের জল কঠিন ব্যাধি সারিয়ে দিতে পারে, এমন কথা স্থানীয়দের মনগড়া।
তবে এই হ্রদে নামার আগে কিছু সতর্কতা মেনে চলা উচিত। যেমন হ্রদে নামার সময় কোনভাবেই যেন চোখে মুখে লবণাক্ত জল ঢুকে না যায়। এছাড়া, শরীরে টাটকা কোনও ক্ষত থাকলে, সেই অবস্থায় জলে নামা একদমই উচিত নয়। কারণ, লবণের উপস্থিতিতে ক্ষতস্থান আরও বিষিয়ে যেতে পারে।
সিওয়ার মরূদ্যানের কাছে রয়েছে 'ক্লিওপেট্রা'জ পুল'। স্থানীয়দের ধারণা অনুসারে, লবণাক্ত হ্রদ থেকে স্নান করে ওঠার পর হাত-পায়ের লবণ ঝেড়ে এই মিষ্টি গরম জলের হ্রদে স্নান করলে নাকি স্বাস্থ্যের উপকার হয়।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন