সমকালীন প্রতিবেদন : একথা অনেকেই বলেন, নতুন কিছু করতে গেলে ঝুঁকি নিতে হয়। ঝুঁকি না নিতে পারলে উন্নতি করা যায়না। তবে কীভাবে এক বড় উদ্যোগ নেওয়ার জন্য ঝুঁকি নিয়েছিলেন সুধা মূর্তি, তা হয়তো অনেকেই জানেন না।
কারণ, অনেকেই ইনফোসিস কোম্পানির নাম শুনলেও, এই কোম্পানি তৈরির নেপথ্যে যার সঞ্চয় প্রথম বিনিয়োগ হিসেবে এসেছিল নারায়ণ মূর্তির হাতে, তিনি হলেন তাঁরই অর্ধাঙ্গিনী সুধা মূর্তি। তাঁদের দুজনের ভালোবাসার গল্পটা একটু অন্যরকম।
একটি মধ্যবিত্ত পরিবারে বড় হয়েছেন সুধা মূর্তি। নারায়ানামুর্তি যখন সুধা'কে বিয়ে করেন, তখন তিনি বেকার। তবে স্বামীর উপর ভরসা ছিল সুধার। তাই যখন নারায়ণমুর্তি সুধাকে বললেন যে, তিনি একটি আইটি কোম্পানি খুলতে চান, তখন সুধা তাঁর বিশ্বাসে আঘাত করেন নি।
তাই হয়তো নিজের সব সঞ্চয় ঢেলে দিয়েছিলেন স্বামীর পরিকল্পনায়। সুধা একটি ছোট্ট টিনের বাক্সে কিছু টাকা জমিয়েছিলেন, যার মোট পরিমাণ ছিল দশ হাজার দু'শো পঞ্চাশ টাকা। এর মধ্যে দু'শো পঞ্চাশ টাকা এমার্জেন্সি'র জন্য রেখে, বাকী দশ হাজার টাকা স্বামীকে দিয়েছিলেন ধার হিসেবে।
আর তাতেই ইনফোসিস-এর যাত্রা শুরু হয়। ইনফোসিস- এর যখন স্বর্ণযুগ চলছে, তখন নারায়ণমুর্তি স্ত্রী'কে এক কোটি টাকা দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তিনি তখন নিজে সেটি না নিয়ে মাদার টেরিজাকে পাঠিয়ে দিতে বলেন। সমাজসেবায় সেই টাকা নিয়োজিত হয়।
একদিকে সুধা ভারতবর্ষের সবথেকে বড় আইটি কোম্পানি ইনফোসিস এর মালিকের স্ত্রী, অন্যদিকে, তাঁর জামাই ঋষি সুনক এখন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী। তবে তা সত্ত্বেও নিজেকে আভিজাত্যের মোড়কে মুড়ে ফেলেন নি সুধা।
তাই সাধারণ কম দামী শাড়ী পরা, সাধারণ কথাবার্তা বলা, সাধারণ মানুষজনের সঙ্গে মেলামেশা করা, ঠাঁট-বাটহীন জীবনযাপন তিনি পছন্দ করেন। তাই এখনো আগের মতোই তিনি কলেজে পড়ান।
এছাড়াও, আগের মতোই পায়ে হেঁটে বা ফিয়াট ট্যাক্সি চেপে ঘুরে বেড়ান। কারণ, এলিট-ক্লাসে'র জন্য নয়, নিজেকে তিনি সপে দিয়েছেন মানুষের জন্য। মহিয়সী মহিলারা তো এমনই হন!
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন