সমকালীন প্রতিবেদন : রবিবারের ঘটনার জেরে সোমবার গোটা দিন ধরে সরগরম রইলো ঠাকুরনগর ঠাকুরবাড়ি প্রাঙ্গণ। মতুয়া ভক্তরা ইতিমধ্যেই যে দুই ভাগে বিভক্ত, এদিন তা আরও একবার প্রমানিত হল। এক পক্ষ শান্তনু ঠাকুরের শাস্তি চাইলেন, অন্যপক্ষ মমতা ঠাকুরের বিরুদ্ধে একত্রিত হলেন।
শুক্রবার থেকে ঠাকুরনগরে এবছরের মতুয়া ধর্ম মহামেলা শুরু হয়েছে। তার আগে থেকেই অবশ্য একটু একটু করে দুপক্ষের বিবাদ প্রকাশ পাচ্ছিল। রবিবার সন্ধ্যায় তারই বড় ঢেউ আছড়ে পড়লো ঠাকুরবাড়িতে।
রবিবার বড়মা বীণাপাণি ঠাকুরের ঘরে প্রবেশের জন্য শান্তনু ঠাকুরের নেতৃত্বে গেটের তালা ভাঙার যে ঘটনা ঘটেছে, তার রেশ চললো গভীর রাত পর্যন্ত। মমতা ঠাকুরের উপর হামলা চালিয়ে ঘরের দখল নিয়েছেন শান্তনু ঠাকুর এবং তার অনুগামীরা, এই অভিযোগ তুলে গাইঘাটা থানায় হাজির হন মমতা ঠাকুর।
বাড়ি ফিরে দেখেন, তার ঘরে ঢোকার মূল গেটে তালা ঝুলছে। এই অবস্থায় একপ্রকার সারারাত ঘরের বাইরেই কাটাতে হয় তাকে। সোমবার সকালে পুলিশের উপস্থিতিতে সেই তালা খোলার ব্যবস্থা হলে ঘরে প্রবেশ করতে পারেন মমতা ঠাকুর।
রবিবারের ঘটনা প্রসঙ্গে শান্তনু ঠাকুরের বক্তব্য, বীণাপাণি ঠাকুরের ঘরে সমস্তস্তরের মতুয়া ভক্তদের প্রবেশের অধিকার আছে। কিন্তু সেই ঘরে মতুয়া ভক্তদের সবাই প্রবেশ করতে না পারায়, সেই ভক্তরাই এদিন তালা ভেঙে সেই ঘরে ঢুকেছেন। তিনি শুধু তাদের সহযোগিতা করেছেন।
অন্যদিকে মমতা ঠাকুরের বক্তব্য, বড়মার ঘরের পাশের ঘরেই তিনি থাকেই। ফলে সেই ঘরে ঢুকতে হলে বড়মার ঘরের ভেতর দিয়েই তাঁকে যেতে হয়। আর এতোদিন শান্তনু ঠাকুর বা তার পরিবারের লোকেরা কেন সেখানে আসার চেষ্টা করেন নি, প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, ক্ষমতার জোরে শান্তনু ঠাকুর তাঁকে উচ্ছেদ করে ওই ঘর দখল নেওয়ার চেষ্টা করছেন।
রবিবারের ঘটনার প্রেক্ষিতে সোমবার বিকেলে মমতা ঠাকুরকে সঙ্গে নিয়ে ঠাকুরনগর এলাকায় প্রতিবাদ এবং ধিক্কার মিছিল বের করে করা হয়। সেখানে তৃণমূলের একাধিক নেতা উপস্থিত ছিলেন। মিছিলে উপস্থিত মানুষের হাতে শান্তনু ঠাকুরের শাস্তির দাবি সম্বলিত প্ল্যাকার্ড দেখা যায়।
পাশাপাশি, অন্য এক পক্ষ হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে বড়মা বীণাপাণি দেবীর ঘরের সামনে উপস্থিত হন। তাদের হাতে থাকা প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল, বড়মা এবং পি আর ঠাকুরের স্মৃতি বিজড়িত ঘরকে হেরিটেজ ঘোষণা করতে হবে। এই খবর লেখা পর্যন্ত দুই পক্ষের আন্দোলনে সরগরম ঠাকুরবাড়ি। আগামীদিনে এর জের কোথায় গড়ায়, এখন সেটাই দেখার।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন