সমকালীন প্রতিবেদন : কর্মবিরতি চলাকালীন আদালতের একটি কক্ষে বিচারকাজ চলায় প্রতিবাদে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন আইনজীবীরা। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিচারপতির সঙ্গে আইনজীবীদের একটি বড় অংশ বিতর্কে জড়িয়ে পড়ায় অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলেন বিচারপতি।
বনগাঁ আদালত সূত্রে জানা গেছে, রতন হালদার নামে বনগাঁ আদালতের একজন লক্লার্ক মারা যাওয়ায় পুরনো নিয়ম অনুযায়ী সেই ব্যক্তির স্মরণে আদালতে একদিন কর্মবিরতি পালন করেন আইনজীবী এবং লক্লার্করা।
বনগাঁ আদালতের আইনজীবীদের দুটি সংগঠন যৌথভাবে আজ সেই কর্মদিবস পালনের সিদ্ধান্ত নেয়। এই সিদ্ধান্তের কথা গতকালই সংশ্লিষ্ট স্থানে জানিয়ে দেওয়া হয়। পুরনো ঘোষণা অনুযায়ী এদিন সকাল থেকে বনগাঁ আদালতে কর্মবিরতি পালন হচ্ছিল।
বনগাঁ ল ইয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সহ সম্পাদক সুপ্রিয় ব্যানার্জীর বক্তব্য, 'কর্মবিরতি চলাকালীন বনগাঁ আদালতের এডিজে (ফাষ্ট ট্রাক ২) আদালতের বিচারপতি সোমা চক্রবর্তীর এজলাসে এক আইনজীবী মামলা চালানোর কাজ করছিলেন। এব্যাপারে তাকে নিষেধ করায় অসন্তোষপ্রকাশ করেন বিচারপতি।'
বিচারপতি এবং আইনজীবীদের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের মধ্যেই হঠাৎ করে অসুস্থ বোধ করেন বিচারপতি সোমা চক্রবর্তী। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে বনগাঁ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকেরা দ্রুত তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা শুরু করেন। বর্তমানে সেখানেই তাঁর চিকিৎসা চলছে।
হাসপাতালের বেডে শুয়ে তিনি বলেন, 'কর্মবিরতি পালন করা আইনজীবীদের নিজস্ব বিষয়। কিন্তু কোনও আইনজীবী যদি এজলাসে এসে বিচারকাজ চালানোর জন্য আবেদন জানান, তাহলে একজন বিচারপতি হিসেবে সেই আবেদনে সাড়া দেওয়া আমার কর্তব্য। আর সেই কর্তব্য পালন করতে গিয়েই আমি কিছু আইনজীবীর রোষে পড়ি।'
এদিকে, এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এদিন আদালত চত্ত্বর কিছু সময়ের জন্য উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এডিজে (ফাষ্ট ট্রাক ২) আদালত কক্ষের গেটে তালা লাগিয়ে দেওয়া হয়। বন্ধ হয়ে যায় বিচারকাজ। আইনজীবীদের দাবি, বিচারপ্রার্থীরা ক্ষিপ্ত হয়ে তালা লাগিয়ে দিয়েছে।
এদিনের বিষয় নিয়ে বনগাঁ লইয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে পরে ঘোষণা করা হয় যে, আজ থেকে বনগাঁ আদালতের এডিজে (ফাষ্ট ট্রাক ২) এজলাস তাঁরা অনির্দিষ্টকালের জন্য বয়কট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। গোটা বিষয়টি তারা কলকাতা হাইকোর্টকে জানাবেন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন