সমকালীন প্রতিবেদন : আজ, রবিবার পয়লা বৈশাখ। শুরু হয়ে গেল ১৪৩১ সাল। বাংলা ক্যালেন্ডার অনুযায়ী চৈত্র সংক্রান্তির পরে পয়লা বৈশাখ থেকে পুরোনো বছর শেষে আরও একটি নতুন বছরের সূচনা হয়। আর এই বাংলা নববর্ষের প্রথম দিনটাকে ব্যবসায়ীরা হালখাতা হিসাবেও পালন করে থাকেন। বহু বছর ধরে এই প্রথা চলে আসছে।
পয়লা বৈশাখের সঙ্গে হালখাতার এক ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। ঠিক সেই কারণেই পয়লা বৈশাখের কয়েক সপ্তাহ আগে থেকেই দোকানে দোকানে নতুন খাতা বিক্রি শুরু হয়ে যায়। তবে জানেন কি, ব্যবসার নতুন খাতাকে কেন হালখাতা বলা হয়?
নববর্ষের সূচনায় প্রত্যেকটি দোকানে লক্ষ্মী–গণেশের পুজোর সঙ্গে নতুন খাতাও পুজো করা হয়। দোকানপাট সেজে ওঠে ফুলে ফুলে। ব্যবসার নতুন খাতায় নতুন কিছু সূচনার প্রতীক হিসাবে স্বস্তিক এঁকে শুরু হয় নতুন বছরের হিসাবনিকেশ।
এক সময় মানুষ ছিল যাযাবর। লাঙলের ব্যবহার শেখার পর এক জায়গায় স্থায়ী বসবাস শিখেছিল মানুষ। যার ফলে সেই জায়গাতেই চাষ করে ফসল ফলাত তারা। আর এই ফসলের বিনিময়ে অন্য জিনিস নেওয়া অর্থাৎ বিনিময় প্রথার মধ্যে মানুষের জীবন চলতে লাগল।
একজনই দায়িত্ব সহকারে বিনিময় কাজটি করতো। আর তখন থেকেই দোকানদারির চল শুরু হল। শুরু হল ব্যবসা। দ্রব্য-বিনিময়ের হিসেব রাখা শুরু হল খাতায়, আর সেই খাতার নাম হল ‘হালখাতা’।
৩৬৫ দিন, অর্থাৎ একবছর পর পুরোনো হিসেব-নিকেশ শেষ করে খাতা বন্ধ করে, নতুন খাতা খোলার দিন হিসেবে বাছা হয়েছিল পয়লা বৈশাখকে। তবে আশ্চর্যের বিষয় হল, পয়লা বৈশাখের উৎসবের সঙ্গে হালখাতার প্রত্যক্ষ কোনও সম্পর্ক নেই।
কাকতালীয়ভাবে দুই দিন এক হয়ে গিয়েছে। অনেকের মতে, হাল শব্দটি সংস্কৃত ও ফরাসি-দুটি ভাষা থেকেই উদ্ভূত। সংস্কৃতে ‘হল’ শব্দের মানে লাঙল, তা থেকে বাংলায় ‘হাল’ এসেছে। ফরাসি থেকে আসা ‘হাল’ শব্দটির অর্থ হলো নতুন।
কিন্তু জানেন কী এর সঙ্গে কীভাবে ইতিহাস যুক্ত আছে? পুরনো কলকাতায় বাবু কালচারে ইংরেজি নববর্ষ উপলক্ষে উৎসবের আয়োজন করা হতো। যদিও সেই সময় বাংলা নববর্ষ নিয়ে কোনো মাতামাতি বা আনন্দ উৎসব লক্ষ করা যেত না।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন