সমকালীন প্রতিবেদন : মহিলারা যে দক্ষতায় কারোর থেকে পিছিয়ে নেই, তা প্রমাণ করেছেন সুমন কুমারী। মধ্যপ্রদেশের ইন্দোরের ‘সেন্ট্রাল স্কুল অব ওয়েপন্স অ্যান্ড ট্যাকটিকস’ থেকে আট সপ্তাহের স্নাইপার কোর্স শেষ করেছেন তিনি। এরপরেই বিএসএফে প্রথম মহিলা স্নাইপার হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে তাঁকে।
অর্থাৎ এবার থেকে লুকিয়ে যুদ্ধ জয়ের মিশনে নাম থাকতে পারে এই সুমন কুমারীর। একইভাবে জঙ্গি হানার পরিকল্পনা ভেস্তে দিতেও সম্মুখ সমরে পাঠানো হবে এই বীরাঙ্গনা মহিলাকে। কিন্তু কে এই মহিলা? কি তাঁর ব্যাকগ্রাউন্ড?
জানা গেছে, হিমাচল প্রদেশের মান্ডি জেলায় জন্ম সুমন কুমারীর। তাঁর বাবা পেশায় ছিলেন একজন ইলেকট্রিশিয়ান। ছোটবেলা থেকে সেনায় যোগদানের স্বপ্ন দেখতেন সুমন। তাঁর এই স্বপ্ন পূরণ হয় ২০২১ সালে। এই বছরই বিএসএফে যোগ দিয়েছিলেন সুমন কুমারী।
এর মাঝে পঞ্জাবে একটি প্লাটুন কমান্ড করার সময় সীমান্তের ওপার থেকে স্নাইপার হামলার হুমকি শুনেছিলেন তিনি। প্রথমে ভয় পেলেও পরে শত্রু দমনের ইচ্ছা তাঁর মধ্যে জেগে ওঠে। দুর্গতিনাশিনী হয়ে উঠতে এরপরেই স্নাইপার প্রশিক্ষণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি।
ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীতে কমান্ডোর পর সবচেয়ে কঠিন প্রশিক্ষণ হচ্ছে স্নাইপার কোর্স। মহিলা হওয়ার কারণে সুমন কুমারী কাছে এই চ্যালেঞ্জটা ছিল সবচেয়ে বেশি। আর সেই প্রশিক্ষণ তিনি শেষ করতে পেরেছেন সহজেই।
তাঁর এই সংকল্প প্রশংসিত হয়েছে বিএসএফের মধ্যেও। বিএসএফ জানিয়েছে, স্নাইপার কোর্সের যে সকল প্রশিক্ষণার্থীরা অসাধারণ দক্ষতার পরিচয় দেন, তাঁদের ‘আলফা’ এবং ‘ব্রাভো’ গ্রেড দেওয়া হয়। সুমন পেয়েছেন ‘ইন্সট্রাক্টর গ্রেড’।
প্রশিক্ষণের সময় কিছু কিছু ক্ষেত্রে তো তিনি পুরুষ প্রশিক্ষণার্থীদের পিছনে ফেলে দিয়েছেন। বিশেষ করে, এই বছর কোর্সে একাগ্রতা এবং ছদ্মবেশের উপর জোর দেওয়া হয়েছিল। যাতে স্নাইপাররা শত্রুর দ্বারা শনাক্ত না হয়ে তাদের অনেক কাছাকাছি যেতে পারে।
এই ক্ষেত্রে বেশিরভাগ পুরুষ প্রশিক্ষণার্থী ব্যর্থ হয়েছেন। সুমন কিন্তু দুর্দান্ত দক্ষতা দেখিয়েছেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তিনি সবার আগে ছিলেন বলে জানিয়েছে বিএসএফ। কঠোর পরিশ্রম, দৃঢ় সংকল্প এবং শেখার ইচ্ছাই যে তাঁকে বাকিদের থেকে আলাদা করে দিয়েছে, তা ফলাও করে বলাই যায়।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন