সমকালীন প্রতিবেদন : এমনিতে গুপ্তধন নিয়ে আমাদের সবার মনে কৌতূহলের শেষ নেই। গুপ্তধন নিয়ে যেমন লেখা হয় গল্প-উপন্যাস, তেমনই কোথাও গুপ্তধন পাওয়া গেলে সেই খবর চাপা থাকেনা, সেই খবর আগুনের মতো ছড়িয়ে পড়ে জায়গায় জায়গায়।
আর এখন তো ইন্টারনেটের জমানা। এখন কোনো খবর ছড়িয়ে পড়তে সময় লাগে না বেশি। তাই সুদূর পানামায় যে গুপ্তধন পাওয়া গেল, তা নিয়ে এখন বিশ্বজুড়ে চর্চা অব্যাহত। সেখানে ১২০০ বছর পুরনো একটি কবর থেকে মিলল বিপুল পরিমাণ সোনা। কবরের ভিতরে খুব স্বাভাবিকভাবেই মানবদেহের অবশিষ্টাংশও উদ্ধার হয়েছে।
জানা গেছে, পানামা শহর থেকে ১১০ মাইল দূরে এল ক্যানো আর্কিওলজিক্যাল পার্কের ভিতর থেকেই এই সোনার খনির হদিস মিলেছে। সেখানেই সোনার চাদর থেকে সোনার বেল্ট, রয়েছে বিস্তর গয়নাগাঁটি। তবে এখানেই শেষ নয়, তিমি মাছের দাঁত দিয়ে তৈরি কানের দুলও নাকি পাওয়া গিয়েছে কবরের ভিতর থেকে!
এছাড়া ব্রেসলেট, মানুষের আঙুল দিয়ে তৈরি আংটি, কুমিরের কানের দুল, ঘণ্টা, কুকুরের দাঁত দিয়ে তৈরি স্কার্ট, হাড় দিয়ে তৈরি বাঁশি ও মাটির থালাবাটি! আর সঙ্গে অনেকগুলি কঙ্কালের অংশবিশেষ। কিন্তু কোথা থেকে এলো এত কঙ্কাল?
প্রত্নতত্ত্ববিদদের অনুমান, কোকল যুগের কোনও উচ্চপদস্থ কর্তাকে এখানে সমাধি দেওয়া হয়েছিল। তাঁর সঙ্গেই এই সব সোনাদানা দেওয়া হয়েছিল। তবে আরও যেটা প্রকাশ্যে আসছে, সেটা জেনে অনেকেরই রোম খাড়া হয়ে যাচ্ছে।
জানা গিয়েছে, বিশাল ওই সমাধিক্ষেত্রে আরও ৩২ জনের দেহাবশেষ পাওয়া গিয়েছে। অনুমান করা হচ্ছে, উচ্চপদস্থ ওই কর্তার সঙ্গে এঁদেরও সেই সময় সমাধি দেওয়া হয়েছিল। তবে, তাঁদের সমাধি দেওয়া হয়েছিল, তাঁদেরকে বলি দেওয়ার পরে। বলি? হ্যাঁ, বলি।
প্রাণ হারানো সেই ব্যক্তির সঙ্গে তাঁর প্রিয়জনদের এভাবে বলি দিয়ে একত্রে সমাধিস্থ করার পিছনে এই বিশ্বাস ছিল যে, এঁরা সকলে যুগযুগান্ত ধরে একসঙ্গে থাকবেন! সেই সময়ে এমনই রীতি ছিল কবর দেওয়ার। বিশ্বাস, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির মৃত্যুর পরে তাঁর সঙ্গে যাঁদের বলি দেওয়া হতো, তাঁরা পরজন্মে ওই ব্যক্তির সঙ্গী হবেন!
কিন্তু এই সবটাই অনুমান। প্রাচীন এই কবরের ইতিহাস এখনো সঠিকভাবে জানা যায়নি। হয়তো বিস্তর গবেষণার পরই সন্ধান মিলবে এই গুপ্তধনের আসল ইতিহাসের। ততদিন এভাবেই অনুমান নিয়ে কৌতূহলকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে আমাদের।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন