সমকালীন প্রতিবেদন : বাংলা সিনেমা জগৎকে এক বিশাল ব্যাপ্তি দিয়েছিলেন সত্যজিৎ রায়। প্রথম বাঙালি হিসেবে সিনেমা দুনিয়ার সর্বশ্রেষ্ঠ পুরস্কার পেয়েছিলেন তিনি। তাঁর পর আবারও এই তালিকায় নাম উঠেছে রক বাঙালি কন্যার। আর তিনি হলেন সঞ্চারী দাস মল্লিক।
গত বছর ৯৫ তম অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ডসে অস্কার পেয়েছে ভারতের ডকুমেন্টরি 'দ্য এলিফ্যান্ট হুইসপারার্স'। এই ডকুমেন্টারিতে একটি হাতির শাবকের গল্প তুলে ধরেছেন পরিচালক জুটি কার্তিকী গঞ্জালভেস এবং গুনীত মোঙ্গা।
আর এই ডকুমেন্টারির সঙ্গেই জড়িয়ে গিয়েছে এক বঙ্গতনয়ার নামও। তিনি এই কলকাতারই মেয়ে। নাম সঞ্চারী দাস মল্লিক। তবে সিনেমা তাঁর রক্তে রয়েছে। সঞ্চারীর সঙ্গে যোগসূত্র রয়েছে প্রবাদপ্রতিম পরিচালক সত্যজিৎ রায়েরও।
জানা যায়, সঞ্চারীর মা শুভা দাস মল্লিক নিজে একজন চলচ্চিত্র নির্মাতা। এমনকি তাঁর বাবা মনোজেন্দু মজুমদারও চলচ্চিত্র চর্চায় সক্রিয় ছিলেন। ১৯৪৭ সালের অক্টোবরে সত্যজিৎ রায় যে চার জন বন্ধুকে নিয়ে ‘ক্যালকাটা ফিল্ম সোসাইটি’ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, মনোজেন্দু মজুমদার ছিলেন তাঁদের একজন।
মা এবং বাবার এই চলচ্চিত্র আত্মিকতাই হয়তো সঞ্চারীর মধ্যে এই চলচ্চিত্র ভাবনাকে জাগ্রত করেছে। সেই কারণেই চলচ্চিত্র নিয়েই তাঁর ধ্যান, জ্ঞান ও সাধনা। জানা যায়, গলফগ্রিনের মেয়ে সঞ্চারীর পড়াশোনা শুরু লরেটো কনভেন্টে।
এরপর ক্যালকাটা ইন্টারন্যাশনাল স্কুল হয়ে মুম্বই এর সেন্ট জেভিয়ার্সে পড়াশোনা করেন তিনি। সেখান থেকে চলে যান পুণের এফটিআইআই-এ ফিল্ম নিয়ে পড়তে। বিগত কয়েক বছর ধরেই মুম্বইয়ে বিজ্ঞাপন ও তথ্যচিত্র সম্পাদনার কাজের সঙ্গে যুক্ত সঞ্চারী।
সঞ্চারী সেই বাঙালি, যাঁর পুরস্কারের ঝুলিতে কেরিয়ারের এতটা শুরুর দিকেই অস্কারের মতো অ্যাওয়ার্ড এসেছে। যে সম্মানে সত্যজিৎ রায় সম্মানিত হয়েছেন, তা আরও এক বাঙালি কন্যার হাতে, এ অত্যন্ত গর্বের সকলের কাছেই।
সত্যজিৎ রায়ও এই সম্মান নিতে অস্কার মঞ্চে পৌঁছতে পারেননি শারীরিক অসুস্থতার জন্য। সঞ্চারীও মঞ্চে উঠে পুরস্কার নিতে পারেননি। তবে সেই পুরস্কারের সঙ্গে জুড়ে গিয়েছে তাঁর নাম, যা বাঘা বাঘা টলিউড পরিচালকদের নেই।
তাই আজ বাঙালি হিসেবে তাঁর জন্য গর্বিত সকলেই। একঝাঁক মুখের ভিড়ে যখন ভারতীয় বাঙালির নাম উঠে এসেছে, তখন সকলেই যেন খানিক নস্ট্যালজিক। গর্ব তো বটেই সকলের কাছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন