সমকালীন প্রতিবেদন : ১৮ তম লোকসভা নির্বাচনের নির্ঘণ্ঠ ঘোষণা হল শনিবার দুপুরে। নির্বাচনের এই নির্ঘণ্ট ঘোষণা করল ভারতের নির্বাচন কমিশন। উপস্থিত ছিলেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার, নির্বাচন কমিশনার গণেশ কুমার, এস এস সান্ধু সহ নির্বাচন কমিশনের ফুল বেঞ্চ।
৭ দফায় লোকসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ৪ জুন ভোট গণনা। ১৯ এপ্রিল প্রথম দফায় ভোট। দ্বিতীয় দফায় ২৬ এপ্রিল ভোট। তৃতীয় দফায় ভোট ৭ মে। চতুর্থ দফায় ভোট ১৩ মে। পঞ্চম দফার ভোট ২০ মে। ষষ্ঠ দফায় ভোট হবে ২৫ মে। ১ জুন সপ্তম তথা শেষ দফার ভোট। ১৬ই জুন শেষ হচ্ছে চলতি লোকসভার মেয়াদ। মোট লোকসভা কেন্দ্র ৫৪৩।
উৎসবের মেজাজে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন পরিচালনা করার জন্য নির্বাচন কমিশন সম্পূর্ণভাবে প্রস্তুত। তাই ভোটারদের নির্বিঘ্নে ভোটদানে অংশগ্রহণ করার জন্য আবেদন জানান মুখ্য নির্বাচন কমিশনার।
এই মুহূর্তে ৯৭ কোটি ভোটার ভারতে। ১০.৫ লক্ষ পোলিং স্টেশনে ভোটগ্রহণ। দু'বছর ধরে ভোটের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এবারের ভোটে সাড়ে ২১ কোটি তরুন ভোটার অংশ নেবেন। ৪৮ হাজার ট্রান্সজেন্ডার ভোটার। ১৮ থেকে ৩০ বছরের ভোটারের সংখ্যা সাড়ে ২১ কোটি। প্রথমবারের জন্য ভোট দেবেন, এমন ভোটার সংখ্যা ১ কোটি ৮২ লক্ষ। পুরুষ ভোটারের থেকে মহিলা ভোটারের সংখ্যা বেশি। ৫৫ লক্ষ ইভিএম। ৪৭ কোটি ১০ লক্ষ মহিলা ভোটার। ৮৫ ঊর্ধ ভোটারের সংখ্যা ৮২ লক্ষ।
ভোটকেন্দ্রে পানীয় জল, শৌচাগার, হুইল চেয়ার, হেল্প ডেস্ক, শেড, আলো ইত্যাদির ব্যবস্থা থাকবে ভোটারদের জন্য প্রত্যেক ভোটকেন্দ্রে। ৮৫ বছরের উপরে বয়স যাদের, যারা ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারবেন না, তাদের বাড়িতে ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। যেকোনো প্রাকৃতিক পরিবেশেই ভোট কর্মীরা যাতে কাজ করতে পারেন, তাদের সেভাবেই প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।
প্রার্থীদের কোনোরকম দুষ্কর্ম সংক্রান্ত অভিযোগ আছে কিনা, প্রার্থীর সম্পত্তির পরিমাণ কত, তা যে কোন ভোটারই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে জানতে পারবেন। ভোটার আইডি কার্ডের মাধ্যমে বুথ কোথায়, তাও জানতে পারবেন। ভোটারের কাছ থেকে কোন অভিযোগ পাওয়ার ১০০ মিনিটের মধ্যেই সেই সমস্যার সমাধান করা হবে।
মাসেল পাওয়ার নিয়ন্ত্রণ করতে সিআরপিএফ যথেষ্ট পরিমাণে মোতায়ন করা হবে। ভোটে কোনরকম রক্তপাত হিংসা বরদাস্ত করা হবে না। ভোটের আগে থেকে ভোট পরবর্তী কোনো সময় তা বরদাস্ত করা হবে না। ননবেলেবেল ওয়ারেন্ট আছে যাদের, তাদের দ্রুত গ্রেপ্তারের নির্দেশ। আন্তর্জাতিক সীমান্তে ড্রোনের মাধ্যমে নজরদারি চালানো হবে।
ভলান্টিয়ার এবং কন্ট্রাকচুয়াল কর্মীদের ভোটে অংশগ্রহণে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে কমিশন। তিন বছরের বেশি যে সরকারি কর্মী পদে রয়েছেন, তাকে সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ। একজন ভোটারের নাম দুই জায়গার ভোটার তালিকায় নাম রয়েছে, এমন ভোটারদেরও চিহ্নিত করা হচ্ছে।
৩৪০০ কোটি টাকা নির্বাচনের আগে উদ্ধার হয়েছে। রাস্তা, রেল, আকাশ পথে চেকিং করা হবে। কোনরকম অর্থ বা অন্যান্য হিসাব বহির্ভূত সামগ্রী আনন্যা করলে তা আটক করা হবে। অর্থের অপব্যবহার রুখতে বদ্ধপরিকর নির্বাচন কমিশন। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গঠনমূলক সমালোচনা করা যেতেই পারে। কিন্তু মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করা যাবে না। তার জন্য সোশ্যাল মিডিয়ার উপর নজরদারি চালানো হবে।
প্রচারের সময় শব্দ ব্যবহারের উপর বিশেষ যত্নবান হতে বলা হয়েছে রাজনৈতিক দলের কর্মীদের। প্রচারে ব্যক্তিগত আক্রমণ না করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে রাজনৈতিক দলগুলিকে। ভোট প্রচারে শিশুদের ব্যবহার না করার কথা বলা হয়েছে রাজনৈতিক দলগুলিকে। ২১০০ অবজারভারকে নিয়োগ করা হয়েছে। অবজারভারের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় বাহিনীসহ সমস্ত ভোট কর্মীকে সর্বসময় কাজের মধ্যে নিয়োগ রাখতে হবে। অকারণে কাউকে বসিয়ে রাখা যাবে না।
দেশের একাধিক রাজ্যের ২৬ টি বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। যে এলাকায় লোকসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, সেই সময়ে বিধানসভার উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সঙ্গে সিকিম, অরুণাচল প্রদেশ উড়িষ্যা এবং অন্ধ্রপ্রদেশে জুনের মধ্যেই বিধানসভার মেয়াদ শেষ হচ্ছে। এই রাজ্যগুলিতে লোকসভার সঙ্গেই বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন