সমকালীন প্রতিবেদন : ভারতের মহিলারা বিভিন্ন সময়ে দেশের নানা গুরুত্বপূর্ণ কাজে নিজেদের অবদান রেখেছেন। সে প্রীতিলতা ওয়াদেদার হোন বা কল্পনা চাওলা, কিংবা ঝুলন গোস্বামীর মতো ক্রিকেটার। সব স্তরে মহিলাদের জয়জয়কার শোনা যায়।
তবে এখন এমন এক মহিলার গল্প শোনাবো, যিনি দেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে মজবুত করতে নিজের জীবনের মূল্যবান ২৫ টা বছর খরচ করেছেন। তিনি শিনা রানী। 'মিশন দিব্যাস্ত্র’ নামে ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির যে প্রকল্প ছিল, তার নেতৃত্বে ছিলেন এই মহিলা বিজ্ঞানী।
জানা যায়, ১৯৯৯ সাল থেকে নাকি অগ্নি ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে কাজ করছেন তিনি। যা সফল হয়েছে অতি সম্প্রতি। দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি অগ্নি-৫ ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ হল দিন কয়েক আগে।
আর তাই নিয়ে দেশজুড়ে হইচই হলেও এর নেপথ্যে থাকা এই মহিলাকে অনেকেই চেনেন না। ১৯৯৮ সালের পোখরান পরমাণু পরীক্ষার পর শিনা ডিআরডিও-তে যোগ দেন। ১৯৯৯ থেকে অগ্নি ক্ষেপণাস্ত্রের ‘লঞ্চ কন্ট্রোল সিস্টেমে’ কাজ করছেন তিনি।
ভারতের ‘মিসাইল ম্যান’ তথা দেশের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি এবং ডিআরডিও-র প্রাক্তন প্রধান এপিজে আব্দুল কালামের প্রত্যক্ষ সান্নিধ্য পেয়েছেন শিনা। অনুপ্রেরণাও পেয়েছেন তাঁর কাছে।
শিনা বর্তমানে হায়দরাবাদের ডিআরডিও-র ‘অ্যাডভান্সড সিস্টেম ল্যাবরেটরি’র অন্যতম বিজ্ঞানী। গত কয়েক বছরে অগ্নি-৫ ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে ব্যস্ত থেকেছেন শিনা। দৌড়ে বেড়িয়েছেন পরীক্ষাগারের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্ত। সংসারও সামলেছেন।
সহকর্মীদের কাছে 'শক্তির ভান্ডার' নামেও পরিচিত ৫৭ বছর বয়সি বিজ্ঞানী। তাই অগ্নি-৫ ক্ষেপণাস্ত্রের সাফল্যকে অনেকেই শিনার ২৫ বছরের তপস্যার ফল বলে মনে করছেন।
উল্লেখ্য, এই অগ্নি-৫ ক্ষেপণাস্ত্রে এমন সেন্সর ব্যবহার করা হয়েছে, যার জন্য যে কোনও সময় নিখুঁত লক্ষ্যে আক্রমণ হানতে পারে সেটি। এছাড়াও, অগ্নি-৫ ক্ষেপণাস্ত্রে এমন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে, যাতে যুদ্ধক্ষেত্রে একাধিক অভিমুখে সেটিকে ব্যবহার করা যায়।
বিশ্বের খুব কম দেশের কাছেই এই সামরিক প্রযুক্তি আছে। এত দিন আমেরিকা, ব্রিটেন, রাশিয়া, ফ্রান্স এবং চিনের কাছে এই প্রযুক্তি ছিল। এবার উন্নত সেই দেশগুলির সঙ্গে একই বন্ধনীতে ঢুকে গেল ভারতও। যার নেপথ্যে রয়েছেন শিনার মতো একজন বীরাঙ্গনা নারী।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন