সমকালীন প্রতিবেদন : একদিকে যেখানে দেশজুড়ে সিএএ লাগু হওয়ার ঘোষণায় ঠাকুরনগর ঠাকুরবাড়িতে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরকে অভিনন্দন জানাচ্ছেন মতুয়াদের একাংশ, অন্যদিকে সেই সিএএর সমালোচনা করে এটাকে বিজেপির একটা ভাওতা বলে অভিহিত করলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী।
মঙ্গলবার হাবড়ার বাণীপুরে সরকারি প্রকল্পের উদ্বোধন এবং সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে সিএএ লাগু করার বিষয়টি নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, রাজ্যে বসবাসকারী মানুষদের মধ্যে যাদের আধার কার্ড সহ অন্যান্য নথি আছে, তারা প্রত্যেকেই নাগরিক।
মুখ্যমন্ত্রী সতর্ক করে বলেন, যারা ভোটদানে অংশ নিচ্ছেন, তারা নাগরিক। তাদেরকে নতুন করে নাগরিক হওয়ার জন্য আবেদন করার কথা বলে তাদেরকে বেনাগরিক করার পরিকল্পনা করেছে কেন্দ্র সরকার। আর এভাবেই তাদেরকে একসময় ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।
সিএএ লাগু করার ঘোষণা আসলে ভোটের চমক বলে উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী নাগরিকত্বের জন্য কোনও আবেদন না করার আবেদন জানান। কেন্দ্রকে হুঁশিয়ারী দিয়ে তিনি বলেন, রাজ্যের একজন নাগরিককেও বিতাড়িত করার চেষ্টা করা হলে, তার পাশে রাজ্য সরকার থাকবে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করার কথা বলে কেন্দ্র সরকার তাদেরকেই বেনাগরিক করে তাদের সম্পত্তি, চাকরি সহ সমস্ত অধিকার কেড়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করেছে। তিনি বেঁচে থাকতে এই রাজ্যে সিএএ, এনআরসি, ডিটেনশন ক্যাম্প কিছুই করতে দেবেন না বলে এদিন জানান তিনি।
এদিন হাবড়ার সরকারি অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী জেলার মোট ৫১ টি প্রকল্পের কাজের সূচনা এবং ৩৮ টি প্রকল্পের শিলান্যাস করেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি, মঞ্চ থেকে ৪৫ জনের হাতে সরকারি সহায়তা তুলে দেন।
এদিকে, সোমবার সন্ধেয় কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে দেশ জুড়ে সিএএ লাগু করার বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি হওয়ার পর থেকে ঠাকুরবাড়িতে মতুয়াদের একাংশ আনন্দে মেতে ওঠেন। মঙ্গলবার সকাল থেকে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মতুয়া ভক্তরা ঠাকুরবাড়িতে হাজির হয়ে শান্তনু ঠাকুরকে অভিনন্দন জানান।
হাবড়ার এদিনের সরকারি অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও রাজ্য এবং জেলা প্রশাসনের পদস্থ আধিকারিকেরা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া, জেলার একাধিক বিধায়ক এবং সাংসদরাও উপস্থিত ছিলেন।
পুরনোদের পাশাপাশি বনগাঁ এবং বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্রের দুই দলীয় প্রার্থী বিশ্বজিৎ দাস এবং হাজি নুরুল ইসলামকে জয়ী করানোর জন্য আবেদন জানান। মুখ্যমন্ত্রীর অনুরোধে এদিন কীর্তন গেয়ে শোনান তৃণমূল বিধায়ক অদিতি মুন্সী।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন