সমকালীন প্রতিবেদন : তখন সবে রাত নেমেছে আমেরিকার মাটিতে। সেই সময় মার্কিন বন্দর বাল্টিমোর থেকে একটি মালবাহী জাহাজ ছাড়ে। তবে কিছুটা দূরে গিয়ে আচমকাই সেই জাহাজ এসে ধাক্কা মারে ‘ফ্রান্সিস স্কট কি’ সেতুর স্তম্ভে।
সেই মালবাহী জাহাজটিতে মোট ২২ জন ক্রু মেম্বার ছিলেন। তাঁরা সকলেই ভারতীয় বলে জানা গেছে। তবে তাঁদের কেউই এতে হতাহত হননি। ভেঙে পরা সেতু থেকে নদীতে তলিয়ে গেছেন বেশ কয়েকজন।
দুর্ঘটনার পর পর জাহাজের ক্রু মেম্বাররাই প্রথমে জলে নেমে উদ্ধারকার্যে হাত লাগান। তাছাড়া, ধাক্কা লাগার ঠিক আগে তাঁরা সতর্ক করে দেন। সেই কারণেই মেরিল্যান্ডের গভর্নর তাঁদেরকে ‘হিরো’ বলেছেন।
সেতুর স্তম্ভে ধাক্কার আগে জাহাজটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। ‘মে ডে’ কল করা হয়। এর ফলে তাঁদের কাউকেই এই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারাতে হয়নি। মঙ্গলবার স্থানীয় সময় রাত দেড়টা নাগাদ ঘটে এই দুর্ঘটনা।
ওই মালবাহী জাহাজের ধাক্কাতেই এই বিপর্যয় ঘটেছে বলে জানা যায়। এই ঘটনার বেশ কয়েকটি ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। সেই সব ভিডিয়োতেই দেখা যাচ্ছে কীভাবে ১৯৭৭ সালে তৈরি সেতুটি ভেঙে পড়েছে।
এই ঘটনায় ২০ জনের মতো মানুষ নদীর জলে তলিয়ে যান। তাঁদের মধ্যে ছ’জনকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি বলে জানান আমেরিকার কোস্টগার্ড কমান্ডের রিয়ার অ্যাডমিরাল শ্যানন গিলরেথ। মনে করা হচ্ছে, এই ছ’জনের মধ্যে কেউই বেঁচে নেই।
উল্লেখ্য, বাল্টিমোর শহরের মধ্যে দিয়ে বয়ে গিয়েছে প্যাটাপসকো নদীটি। সেই নদীর উপরেই তৈরি করা হয়েছিল ১.৬ মাইল দীর্ঘ ‘ফ্রান্সিস স্কট কি’ সেতুটি। আট লেনের এই সেতুর উপর দিয়ে সব সময়ই যান চলাচল করে।
বাল্টিমোর বন্দরের বাইরের ক্রসিং এবং বাল্টিমোর বেল্টওয়ের মধ্যে যোগসূত্র তৈরি করেছিল এই সেতু। ১৯৭৭ সালে ফ্রান্সিস স্কট কি ব্রিজের উদ্বোধন হয়। বছরভর ওই সেতুর উপর দিয়ে ১ কোটির বেশি গাড়ি যাতায়াত করে।
আমেরিকার শিল্পশহর বাল্টিমোরের যোগাযোগ ব্যবস্থার অন্যতম মাধ্যম এই সেতু ভেঙে পড়ায় উদ্বিগ্ন স্থানীয়রা। এদিকে, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এই বিপর্যয়কে ‘ভয়াবহ দুর্ঘটনা’ বলে অভিহিত করছেন।
সেই সঙ্গে যত দ্রুত সম্ভব সেতুটি পুনর্নির্মাণের কাজ করা হবে বলে জানিয়েছেন। তবে গোটা ঘটনায় জাহাজে থাকা ২২ ভারতীয়কেই হিরোর তকমা দেওয়া হয়েছে।
তাঁরা যেমন নিজেদের প্রাণ বাঁচিয়েছেন, তেমনই আবার চালিয়েছেন উদ্ধারকাজও। তাই আজ আমেরিকার মাটিতে এই ভয়াবহতার মাঝেই ভারতীয়দের জয়জয়কার শোনা যাচ্ছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন