সমকালীন প্রতিবেদন : ঘুমন্ত অবস্থায় পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে পর পর গুলি করে খুন করা হল তৃণমূলের এক উপপ্রধানকে। রবিবার রাতে উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগর এলাকার এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। আততায়ীকে ধরা না গেলেও সনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে।
পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, অশোকনগর থানার গুমা ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের বর্তমান উপপ্রধান ছিলেন বিজন দাস (৪৭)। তার আগে তিনি এই পঞ্চায়েতের প্রধানও ছিলেন। এলাকার মানুষের কাছে তিনি 'ভগবান' হিসেবে পরিচিত ছিলেন।
গুমার নিবেদিতাপল্লী এলাকায় ছাত্রবীথি নামে একটি ক্লাবের দুদিনের অনুষ্ঠান ছিল। সেখানেই রবিবার সকাল থেকে ব্যস্ত ছিলেন বিজন। দুপুরে সেখানে পিকনিকের খাওয়া দাওয়া সেরে বিকেল ৫ টা নাগাদ আনন্দ দত্ত নামে এলাকার এক পরিচিত ব্যক্তির বাড়িতে বিশ্রাম নিতে যান।
বাড়ির মালিক আনন্দ দত্ত জানান, 'বিজন আমার বাড়িতে বিশ্রাম নিতে আসে। নিচের ঘরে সে একাই ছিল। আমরা উপরের ঘরে ছিলাম। রাতে কখন ঘুমিয়ে পড়েছিলাম জানি না। বিজনও নিচের ঘরে বিশ্রাম নিতে নিতে একসময় ঘুমিয়ে পড়ে।'
রাত সাড়ে ১১ টা নাগাদ চিৎকার শুনে ঘুম ভাঙে বাড়ির লোকেদের। বাড়ির লোকেরা নিচে নেমে দেখেন, ঘরের ভেতরে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন বিজন। তাঁর মাথা, ঘাড় এবং বুকে গুলির আঘাতের চিহ্ন ছিল।
স্থানীয়রা তড়িঘড়ি বিজনকে বারাসত জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এই ঘটনার কথা ছড়িয়ে পড়তেই এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। রাতেই এলাকায় যান তৃণমূল সাংসদ কাকলী ঘোষ দস্তিদার।
এলাকার মানুষেরা পুলিশকে জানিয়েছেন যে, এলাকার জমি মাফিয়া গৌতম দাসের অসামাজিক কাজের বিরোধীতা করতেন বিজন। আর সেই কারণে 'পথের কাঁটা' বিজনকে সরাতে অনেকদিন ধরেই চেষ্টা চালাচ্ছিল গৌতম।
এদিন আনন্দ দত্তর বাড়িতে বিজন একা শুয়ে আছে বলে জানতে পেরে সেখানেই হামলা চালায় গৌতম। ঘুমন্ত অবস্থায় বিজনের উপর পর পর তিনটি গুলি চালায় গৌতম। আর তারপর ধরা পড়ে যাওয়ার ভয়ে সেখান থেকে পালিয়ে যায়। পালানোর সময় স্থানীয়রা তাকে দেখে ফেলেন।
খুনের ঘটনার খবর পেয়ে সোমবার সকালে মৃত বিজন দাসের বাড়িতে যান অশোকনগরের বিধায়ক নারায়ণ গোস্বামী। বিজনের শোকার্ত পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দেন। এব্যাপারে নারায়ণ গোস্বামী খুনীর দ্রুত গ্রেপ্তার এবং কঠোর শাস্তির দাবি করেছেন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন