সমকালীন প্রতিবেদন : ছোটবেলা থেকেই নিজের মামার পরেই আর কোনো মামা যদি সব থেকে প্রিয় হয়ে থাকে, তা হল চাঁদ মামা। তবে আজ পর্যন্ত আমরা পৃথিবীবাসীরা কেবলমাত্র চাঁদ মামার একটা দিকই দেখে এসেছি। চন্দ্রপৃষ্ঠের আরেকটা দিক যে কেমন দেখতে তা আমরা জানিনা। কারণ, চাঁদের কেবলমাত্র একটি পিঠই পৃথিবী থেকে দৃশ্যমান।
তবে নাসার দৌলতে এবার আমরা দেখতে পারবো চাঁদের অন্ধকার পৃষ্ঠের ছবিও। আসলে অন্ধকার পৃষ্ঠ বললেও চাঁদের অপরদিকেও কিন্তু প্রায় সামনের মতই উজ্জ্বলতা আছে। আসলে পৃথিবীকে একবার প্রদক্ষিণ করতে চাঁদের সময় লেগে যায় প্রায় ২৭ দিন।
আর নিজের অক্ষে ঘুরতেও চাঁদের প্রায় এই সমান সময়ই লাগে। আর সেই জন্যই পৃথিবীবাসীর আর চাঁদের অপর প্রান্ত দেখার সুযোগ হয় না। তবে নাসার দৌলতে এই প্রথমবার চাঁদের উল্টোপৃষ্ঠের ছবি দেখতে পেরে অবাক গোটা পৃথিবীবাসী। তাও আবার পরিষ্কারভাবে।
ছবিতে দেখতে পাওয়া যাচ্ছে যে, চাঁদের উল্টোপৃষ্ঠে সামনের থেকেও বেশি পরিমাণে গহ্বর রয়েছে। ফলে এর থেকে বোঝা গেল যে, অতীতে চাঁদের সামনের থেকে বেশি উল্কাপাত পিছনের পৃষ্ঠে হয়েছে। চাঁদের এই পৃষ্ঠেও অগ্ন্যুত্পাত এর কারনে বেরোনো লাভার প্রলেপে কিছু কিছু সমতল ভূমি রয়েছে।
কিন্তু তা খুবই নগণ্য পরিমাণে। ব্যাসল্ট শিলা দ্বারা গঠিত ওই সমতল ভূমিরও একটি নাম রয়েছে, যাকে 'মারিয়া' বলা হয়। মারিয়া আসলে একটি লাতিন শব্দ, যার অর্থ হলো সাগর। আগেকার সময়ের সাধারণ মানুষ এবং গবেষকরা মনে করতেন যে, চাঁদের ওই বড় বড় গহ্বরগুলিতে সাগর রয়েছে।
আর সেই জন্যই এর এমন নামকরণ। চাঁদ সম্পর্কে আরো বেশি করে গবেষণা করার জন্য নাসার পাঠানো 'লুনার রিকনেসান্স অরবিটার' এর মাধ্যমেই চাঁদের এমন দুর্লভ ছবি তোলা সম্ভব হয়েছে।
সাল ২০০৯ থেকে ২০১১ পর্যন্ত এই আরবিটার চাঁদের প্রচুর পরিমাণে হাই ডেফিনেশন ছবি ক্যাপচার করেছে। আর সেই ছবিগুলির মধ্যে থেকে প্রায় ১৫ হাজারের কাছাকাছি হাই ডেফিনেশন ছবি একত্রিত করে নাসা এই ছবিটি বানিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ করেছে।
গবেষকদের মতে, নাসার এই কর্মকাণ্ডের জন্য আগামীতে চন্দ্র মিশনগুলি সফলভাবে করতে এবং এগিয়ে নিয়ে যেতে অনেক সুবিধা হবে। এমনকি ভবিষ্যতে চাঁদের এই পৃষ্ঠে কোনো স্যাটেলাইট বা মনুষ্যবাহী রকেট লঞ্চ করতে হলে একটি নিরাপদ লঞ্চিং এরিয়া খুঁজতেও সুবিধা হবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন