সমকালীন প্রতিবেদন : ছোটবেলা থেকেই কানে শোনায় ছিল মারাত্মক সমস্যা। কৈশোরে পা দিতে না দিতেই পুরোপুরি হারিয়ে ফেলেন শ্রবণশক্তি। কিন্তু শত প্রতিকূলতা দমাতে পারেনি তাঁকে। অদম্য মনের জেদকে পুঁজি করে সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন তিনি।
শুধু তাই নয়, প্রতিবন্ধী হিসেবে সংরক্ষণ ছাড়াই এই সাফল্য পাওয়ায় রীতিমতো নজির তৈরি করেছেন দিল্লির মেয়ে সৌম্যা শর্মা। সৌম্যা শর্মার বাবা-মা দু'জনেই ছিলেন ডাক্তার। তাঁরা জানান, ১১ বছর বয়স থেকেই সৌম্যার শ্রবণশক্তি নষ্ট হতে শুরু করেছিল।
তারপর ধীরে ধীরে ১৬ বছর বয়সে সম্পূর্ণভাবে বধিরতা গ্রাস করে তাঁকে। বহু চিকিৎসা হয়েছে, ওষুধপত্র চলেছে অনেক অনেক দিন। কিন্তু তাতেও কাজ হয়নি। বাধ্য হয়ে একটি হিয়ারিং এইড ব্যবহার করতে হয় সৌম্যাকে। কিন্ত তাও তাঁর পড়াশুনা থামেনি।
স্কুলের পড়াশোনা শেষ করে ন্যাশনাল ল স্কুলে ভর্তি হন সৌম্যা। আইন নিয়ে স্নাতক উত্তীর্ণ হন তিনি। এক অর্থে শারীরিক প্রতিকূলতা ছিল তাঁর। কিন্তু কখনও এক মুহূর্তের জন্য হেরে যাওয়ার মানসিকতা মনে আনেননি তিনি। পড়াশোনা থেমে যায়নি এক মুহূর্তের জন্য।
আর কঠোর পরিশ্রমে মাত্র ২৩ বছরেই দেশের অন্যতম কঠিন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা ইউপিএসসি-তে উত্তীর্ণ হন সৌম্যা। ২০১৭ সালে সর্বভারতীয় স্তরে ৯ র্যাঙ্ক অর্জন করেন তিনি। কোনওরকম কোচিং ছাড়াই মাত্র ৪ মাসের প্রস্তুতিতে একবারেই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে চমকে দিয়েছেন সৌম্যা।
কিন্তু এখানে সবথেকে অবাক করে যে বিষয়টি, তা হল সৌম্যা শর্মা নিজে শ্রবণের ক্ষেত্রে বিশেষভাবে সক্ষম হলেও, পরীক্ষার ফর্ম ফিলআপের সময় তিনি কোনওভাবেই বিশেষভাবে সক্ষম হিসেবে পরীক্ষা দেননি।
নিজের যোগ্যতায় একজন সাধারণ পরীক্ষার্থী হিসেবেই ইউপিএসসি উত্তীর্ণ হন সৌম্যা। সেই কারণে এমন মহিলার লড়াইয়ের গল্প যে অনেককে অনুপ্রেরণা দেবে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন