সমকালীন প্রতিবেদন : ভারতের সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান হল 'ভারতরত্ন'। তারপর জাতীয় স্তরের অন্যতম সম্মান হল পদ্ম পুরস্কার। এই পুরস্কারকে দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সম্মান বলে ধরা হয়। আর এবার এই পুরস্কারে ভূষিত হবেন রাজ্যের একঝাঁক সম্মানীয় ব্যক্তি। দেশের প্রজাতন্ত্র দিবসের আগেই এই তালিকা ঘোষণা করা হয়।
২০২৪-এর পদ্ম সম্মান প্রাপকদের মধ্যে যেমন রয়েছেন পুরুলিয়ার পরিবেশ প্রেমী দুখু মাঝি, তেমনই এই তালিকায় নাম রয়েছে বীরভূমের লোকগানের শিল্পী রতন কাহারের। মূলত টুসু ও ঝুমুর ঘরানার গান লিখে, তাতে সুর দিয়ে এবং তা গেয়েছেন এই লোকশিল্পী।
তবে তাঁকে নামে সবাই না চিনলেও, তাঁর কাজ কমবেশি সকলের কর্ণকুহরে প্রবেশ করেছে। কারণ, তাঁর লেখা ও সুর দেওয়া 'বড়লোকের বিটি লো' গানটি শোনেন নি, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দায়।
আসমুদ্র হিমাচলে এই গানকে পৌঁছে দিয়েছেন র্যাপ শিল্পী বাদশা। যদিও শুরুতে এই শিল্পীকে সম্মান দেননি বাদশা। তবে পরে তাঁকে সাম্মানিক দিকে তাঁর থেকে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছিলেন এই বিখ্যাত গায়ক।
উল্লেখ্য, ছোট থেকেই লোকগানের প্রতি টান ছিল রতন কাহারের। তাই বীরভূমের লালমাটিকে আঁকড়ে ধরে বাঁচতে বাঁচতে যে কখন লোকগানের মাধ্যমে জীবনের সুর বাঁধা হয়ে গেছে, তা শিল্পী নিজেও জানেন না।
জানা যায়, ১৯৭২ সালে শিল্পীর প্রথম গান রেকর্ড হয় রেডিওতে। সেই বছরই রেডিওতে শোনা যায় তাঁর গান। আর সেই গান গেয়ে তিনি পারিশ্রমিক হিসেবে পেয়েছিলেন মাত্র ৭৭ টাকা ১৫ পয়সা। তবে শিল্পকর্মের থেকে এই উপার্জন নিয়েও কখনো আক্ষেপ করেননি এই মাটির মানুষটি।
তবে এবার পদ্ম সম্মান প্রাপকদের তালিকায় নাম রয়েছে এই প্রথিতযশা শিল্পীর নাম। বাংলা লোকগানের জগতে তাঁর অসামান্য অবদানের জন্যই তাঁকে এই বিশেষ সম্মানে ভূষিত করা হচ্ছে।
বীরভূমের সিউড়ির নগরী পাড়ার রতন কাহার এখনো পর্যন্ত আড়াইশোর বেশি লোকগান লিখে, তাতে সুর দিয়ে, সেগুলিকে গেয়েছেন। তাই এই সম্মান পাওয়ার খবর শুনে শিল্পী আজ দারুন খুশি।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন