সমকালীন প্রতিবেদন : রাম মন্দির দেখার উন্মাদনায় হেঁটেই মুম্বই থেকে অযোধ্যা পাড়ি দিলেন শবনম। তাঁর ধর্ম আলাদা। ভগবান রাম তাঁর আরাধ্য দেবতা নন। তাতে কী? স্টিরিওটাইপ বিশ্বাস ভেঙে প্রায় দেড় হাজার কিলোমিটার পথ পেরিয়ে ২২ জানুয়ারির প্রাণ প্রতিষ্ঠা উৎসবে পৌঁছবেন রামভক্ত এই মুসলিম তরুণী।
রামের উপাসনা করতে হিন্দু হওয়ার প্রয়োজন নেই। ধর্মের নামে বিভাজন সৃষ্টিকারীদের যেন এই বার্তা দিতেই হাঁটতে শুরু করেছেন শবনম। তাঁর মতে, মন থেকে ভালো মানুষ হলেই রামের ভক্ত হওয়া যায়।
তাই মুম্বই থেকে পায়ে হেঁটে অযোধ্যা পর্যন্ত যাত্রা শুরু করেছেন তিনি। মোট ১৪২৫ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে পৌঁছবেন রাম মন্দিরে। খবর প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই সোশ্যাল মিডিয়া তোলপাড়।
ধর্মের ধ্বজাধারীরা ইতিমধ্যেই শবনমকে টাইমলাইন জুড়ে গাল পাড়তে শুরু করেছেন। লাগাতার কটাক্ষের শিকার হচ্ছেন তিনি। তা সত্ত্বেও লক্ষ্য থেকে টলানো যায়নি এই মুসলিম তরুণীকে। গেরুয়া পতাকা হাতে নিয়ে অযোধ্যার পথে এগিয়ে চলেছেন তিনি।
মাথা ঢাকা রয়েছে হিজাবে। কিন্তু, কেন হঠাৎ রামমন্দির যাত্রা? শবনমের অকপট উত্তর, 'ভগবান রাম সকলেরই। জাত বা ধর্মের ভেদাভেদ করে তাঁর ভাগ করা যায় না।'
মুসলিম তরুণীর বক্তব্য, 'রামের উপাসনা করতে গেলে সমস্ত সীমানা তুচ্ছ হয়ে যায়। শুধু হিন্দুরাই রামের ভক্ত হতে পারেন, এমনটা মোটেও নয়। ভালো মানুষ হলেই রামের আরাধনা করা যেতে পারে।'
এই যাত্রাপথে শবনমের অপর দুই সঙ্গী রামভক্ত রমনরাজ শর্মা এবং বিনীত পাণ্ডে। বর্তমানে নেটপাড়ায় ভাইরাল এই তিন পুণ্যার্থীর রাম মন্দির যাত্রার খবর।
যাত্রাপথে তাঁদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন পুলিশ থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ। খাবারের ব্যবস্থা থেকে মাথা গোঁজার ঠাঁই, সব কিছুরই বন্দোবস্ত করে দিয়েছে পুলিশ।
'জয় শ্রীরাম' ধ্বনিতে শবনমকে স্বাগত জানিয়েছেন ওলিগলির মানুষ। মুসলিম নাগরিকরাও শবনমের এই উদ্যোগে খুশি। যেন আজ ভক্তির কাছে হার মেনেছে ধর্মের ভেদাভেদ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন