সমকালীন প্রতিবেদন : বিয়ে উপলক্ষ্যে সেজে উঠেছে গোটা বাড়ি। আত্মীয়–পরিজনেরাও আসতে শুরু করেছেন। কিন্তু সেই বিয়েবাড়িতেই একি কান্ড। গোটা বিয়েবাড়ি যে পরিণত হয়েছে একটি রক্তদান শিবিরে।
অবাক হওয়ার মতোই ঘটনা বটে। আসলে নিজের বিয়ে উপলক্ষ্যে বিয়ের আগের দিন বাড়িতে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করেছিলেন এই বিয়ের পাত্রী সঞ্চয়িতা রায় নিজেই। পেশায় আইনজীবী সঞ্চয়িতার এমন উদ্যোগকে সাঁধুবাদ জানিয়েছেন সকলে।
ছোটবেলা থেকেই সামাজিক কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকার মানসিকতা তৈরি হয়েছে সঞ্চয়িতার। আর এমন মানসিকতা তৈরি হওয়ার পেছনে ভূমিকা রয়েছে সঞ্চয়িতার নিজের গ্রাম বনগাঁর কালুপুরের উনাই নেতাজী সেবা প্রতিষ্ঠানের।
বেশ কয়েক বছর আগে সঞ্চয়িতার এক আত্মীয় অসুস্থ হওয়ার কারণে একপ্রকার রক্তের অভাবেই শেষ পর্যন্ত আর ফিরতে পারেন নি। পাশাপাশি এমনও হয়েছে, তাঁরই আর এক আত্মীয়াকে রক্ত দান করে বাঁচিয়ে তুলেছে তাঁর এলাকার ওই সেবা প্রতিষ্ঠান।
এমনই এক পরিবেশে বড় হয়ে ওঠা ক্রিমিনোলজিতে স্নাতকোত্তর সঞ্চয়িতা একটা সময় থেকে প্রতি বছর রক্তদানে সামিল হচ্ছেন। আর মায়ের সেই ইচ্ছে পূরণ করতেই নিজের বিয়ে উপলক্ষ্যে এই রক্তদান শিবিরের আয়োজন করলেন সঞ্চয়িতা।
সঞ্চয়িতা জানালেন, 'অনেক জায়গাতেই বিভিন্ন অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে রক্তদান শিবিরের আয়োজন হয়। কিন্তু বিয়ে উপলক্ষ্যে তেমন একটা দেখা যায় না। মা চেয়েছিলেন, যদি এমন কিছু করা যায়।'
সঞ্চয়িতার এমন ইচ্ছে জানার পর তাঁর বাড়িতে শিবির করার ব্যাপারে সর্বতভাবে সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছিলেন বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালের ব্ল্যাড ব্যাঙ্কের দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক গোপাল পোদ্দার। সঞ্চয়িতার এই উদ্যোগে আপ্লুত তিনি।
সঞ্চয়িতার বিয়ে উপলক্ষ্যে বিয়ের আগের দিন বৃহস্পতিবার তাঁর নিজের বাড়িতে বসেছিল এই রক্তদান শিবির। আর সেখানে নিজেও রক্ত দান করলেন সঞ্চয়িতা। পাশাপাশি, নিমন্ত্রিত আত্মীয়দের মধ্যে অনেকেই রক্ত দান করলেন। সঞ্চয়িতার এই উদ্যোগ সমাজের অন্যদেরকেও উৎসাহিত করবে বলে আশা করছেন সবাই।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন