Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

সোমবার, ২০ নভেম্বর, ২০২৩

রাজা কৃষ্ণচন্দ্রকে ঘোর বিপদ থেকে রক্ষা করেছিলেন স্বয়ং মা জগদ্ধাত্রী

 

Mother-Jagaddhatri

সমকালীন প্রতিবেদন : স্বাধীনতার বহু আগে ফরাসিদের উপনিবেশ ছিল চন্দননগর। তৎকালীন ফরাসিদের দেওয়ান ছিলেন ইন্দ্রনারায়ণ চৌধুরী। তিনি ছিলেন নদিয়ার রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। 

নবাব আলিবর্দির রাজত্বকালে রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায়ের কাছে ১২ লক্ষ টাকা নজরানা দাবি করা হয়। নজরানা দিতে অক্ষম হলে নবাব রাজাকে বন্দি করেন। কারাবন্দি থাকার কারণে দুর্গাপুজো করতে পারেননি রাজা। 

কারাগার থেকে মুক্ত হওয়ার পর বিজয়া দশমীর দিনে নৌকায় ফেরার পথে তিনি সিংহবাহিনী এক দেবীর স্বপ্নাদেশ পান। তাঁকে নির্দেশ দেওয়া হয় কার্তিক মাসের শুক্লা নবমীর সময় জগদ্ধাত্রী দেবীর পুজোর আয়োজন করার জন্য। 

সেই মতো চন্দননগরের গঙ্গাপাড়ের নিচু পাটি চাউল পট্টি এলাকায় নৌকা থামিয়ে রাজা কৃষ্ণচন্দ্র ও ইন্দ্রনারায়ণ চৌধুরী- দু’জন মিলে এই পুজোর আয়োজন করেন। চাল পট্টি এলাকার ব্যবসায়ীরা এগিয়ে আসেন পুজোর জন্য। শুরু হয় প্রথম জগদ্ধাত্রী পুজোর। 

শোনা যায়, পরের বছর থেকে রাজা কৃষ্ণচন্দ্র কৃষ্ণনগরে নিজের রাজবাড়িতেও দেবী প্রতিমার আরাধনা শুরু করেন। আবার অনেকে বলেন, চন্দননগরে জগদ্ধাত্রী পুজোর প্রচলন হয় ইন্দ্রনারায়ণ চৌধুরীর হাত ধরে। 

কৃষ্ণনগর রাজবাড়ির জগদ্ধাত্রী পুজো দেখে মুগ্ধ হয়ে ইন্দ্রনারায়ণ চন্দননগরের লক্ষ্মীগঞ্জ চাউলপট্টির নিচুপাটিতে জগদ্ধাত্রী পুজোর সূচনা করেন। যদিও এই কাহিনী নিয়ে মতান্তর আছে। কারণ, ইন্দ্রনারায়ণের মৃত্যু হয়েছিল ১৭৫৬ সালে। 

তাই ১৭৫৬ সালে কৃষ্ণনগরে জগদ্ধাত্রী পুজোর প্রচলন আদৌ হয়েছিল কি না, তা নিয়ে যথেষ্ট দ্বিমত আছে গবেষকদের মধ্যেই। কৃষ্ণনগর রাজবাড়ির মতে, এই পুজোটি মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্র রায় ১৭১০ খৃষ্টাব্দে শুরু করেছিলেন। 

তিনি নাকি কোনও এক কারণে দুর্গা পুজোর সময়ে তৎকালীন নবাবের হাতে বন্দি হন। কারাগারে থাকাকালীন স্বপ্নাদেশ পেয়েছিলেন পরের মাসের অর্থাৎ কার্তিক মাসের শুক্লা নবমীতে এই পুজো করার জন্য। 

ছাড়া পেয়ে তিনি জগদ্ধাত্রী পুজোর সূচনা করেন। সময়কাল নিয়ে মতভেদ থাকলেও ধরা হয় এই পুজো শুরু সর্বপ্রথম কৃষ্ণনগরে। এর পরে চন্দননগর বা অন্যান্য স্থানে জগদ্ধাত্রী পুজোর প্রচলন হয়।

তবে ইতিহাস যাই হোক না কেন, বর্তমানে জগদ্ধাত্রী পুজো যেন চন্দননগর ও কৃষ্ণনগরের এক ঐতিহ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে, যা এক অমোঘ বিশ্বাস নিয়ে থেকে যাবে বহুকাল পরেও। 


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন