সমকালীন প্রতিবেদন : গত ২৩ আগস্টে চাঁদের মাটিতে পা রেখেছিল বিক্রম। চাঁদের অন্ধকারাচ্ছন্ন দক্ষিণ মেরুতে তৈরি হয়েছিল ইতিহাস। পরে তার পেটের ভিতর থেকে বেরিয়ে আসে প্রজ্ঞান। আর তাদের কাজ ও অবদান আজ কারও কাছেই অজানা কোনো বিষয় নয়।
তাই আমরা সেই নিয়ে বিশেষ কিছু আলোচনা করবো না। তবে বিক্রমের করা একটি কাজ নিয়ে আলোচনা হবে, যা এতদিন পর্যন্ত জানতেন না কেউই। এই বিষয়ে কয়েকদিন আগেই এক চমকপ্রদ তথ্য প্রকাশ করেছে ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা।
অবতরণের মুহূর্তের কথা জানাতে গিয়ে শুক্রবার ভারতীয় মহাকাশ সংস্থা জানায় যে, সব মিলিয়ে চন্দ্রপৃষ্ঠের ২.০৬ টন উপাদান উড়েছিল সেই সময়। যা ছড়িয়ে ছিল ১০৮.৪ বর্গমিটার অঞ্চলে। ওই ধুলো উড়েই ল্যান্ডারের চারপাশে গড়ে উঠেছিল উজ্জ্বল এলাকা। বিজ্ঞানীরা একেই বলছেন ‘ইজেক্টা হ্যালো’ বা ‘রিফ্লেকটেন্স অ্যানোমালি’।
শুক্রবার ইসরো বিবৃতি দিয়ে বলেছে, ‘২৩ অক্টোবর অবতরণের সময় চন্দ্রযান-৩ এর ল্যান্ডার চন্দ্রপৃষ্ঠের বিভিন্ন বস্তু উড়িয়ে সুদৃশ্য ‘ইজেক্টা হ্যালো’ তৈরি করেছিল। ন্যাশনাল রিমোট সেনসিং সেন্টার-এর বিজ্ঞানীদের ধারণা, অবতরণের সময় ১০৮.৫ বর্গমিটার এলাকা জুড়ে চাঁদের ২.০৬ টন রেগোলিথ উড়িয়েছিল ল্যান্ডার।’
এই ঘটনা ধরার জন্য চন্দ্রযান-২ এর কক্ষপথে বসানো অরবিটার হাই রেজোলিউশন ক্যামেরা-র তোলা ছবির উপর নির্ভর করেন রয়েছেন বিজ্ঞানীরা। বিক্রমের অবতরণের কিছুক্ষণ আগে এবং পরে তোলা ছবির তুলনা করে দেখেছেন তাঁরা। তাতেই দেখা গিয়েছে, ল্যান্ডারের চারপাশে রয়েছে উজ্জ্বল এক চক্র।
এই ‘ইজেক্টা হ্যালো’ পরীক্ষার মাধ্যমে চাঁদের রেগোলিথ সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা হতে চলেছে বিজ্ঞানীদের। চাঁদের মাটির বৈচিত্র কী, তা জানতে পারবেন বিজ্ঞানীরা। চন্দ্রযান-২ মিশন ব্যর্থ হওয়ার পর চন্দ্রযান-৩ মিশনের দিকে ঝাঁপায় ইসরো।
প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত সফল অবতরণ করা এবং তারপর চাঁদের মাটিতে একাধিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানোই ছিল চন্দ্রযান-৩ মিশনের মূল উদ্দেশ্য। আর সেই উদ্দেশ্যে একশোভাগের বেশিই সফল হয়েছে চন্দ্রযান-৩। আর এই তথ্য থেকে যে ভবিষ্যতে আরো অনেক গবেষণার পথ খুলে যাবে, তাতেও কোনো সন্দেহ রইল না।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন