সমকালীন প্রতিবেদন : ভারতের বুকে রেল দুর্ঘটনা কোনও নতুন বিষয় নয়। বিহারের গাইসাল থেকে ওড়িশার বাহানাগা, একের পর এক ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনার সাক্ষী থেকেছে আমাদের দেশ। সম্প্রতি, ওড়িশায় করমণ্ডল এক্সপ্রেস দূর্ঘটনার স্মৃতি এখনও টাটকা। এখনও অনেকের মনে ট্রেনের চড়া যেন আতঙ্কের সমান হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এই অবস্থায় আবারও এক বড়সড় ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারতো গতকাল। এবারেও হয়তো একটি যাত্রীবাহী এক্সপ্রেস ট্রেন পড়তো এই দুর্ঘটনার কবলে। কিন্তু শুধুমাত্র গার্ডের বুদ্ধি এবং তৎপরতার জেরেই প্রাণে বেঁচে বাড়ি ফিরতে পারলেন শয়ে শয়ে যাত্রী।
শুক্রবার ঘটনাটি ঘটেছে মহারাষ্ট্রের আকুরদি এবং চিঞ্চওয়াড় স্টেশনের মাঝে। রেল সূত্রে খবর, ওই রুটেই চার দিনের মধ্যে এই নিয়ে দ্বিতীয় এমন ঘটনা ঘটলো। সূত্রের খবর, পুণেগামী একটি লোকাল ট্রেন ওই রুট দিয়েই যাচ্ছিল।
যে লাইন ধরে ট্রেনটি যাচ্ছিল, তার পাশের লাইনের উপরেই একাধিক পাথরের চাঁই লক্ষ্য করেন গার্ড সন্দীপ ভালেরাও। তিনি সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি চিঞ্চওয়াড় স্টেশন ম্যানেজার ম্যাথু জর্জকে জানান। লোকাল ট্রেনের গার্ড সন্দীপের কাছ থেকে খবর পেয়েই মুম্বইগামী নগরকয়েল-সিএমএসটি এক্সপ্রেসের লোকো পাইলট এবং গার্ডকে সতর্ক করেন চিঞ্চওয়াড় স্টেশন ম্যানেজার।
কারণ, সেই লাইনেই আসছিল ওই এক্সপ্রেস ট্রেনটি। এমনকি ততক্ষণে ট্রেনটি প্রায় কাছাকাছি চলে এসেছিল বলে জানা গেছে। তবে আগে থেকেই খবর পেয়ে যাওয়ায় ট্রেনের গতি কমিয়ে দেন ওই ট্রেনের চালক। ট্রেনটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ার আগেই দাঁড়িয়ে যায়।
এরপর ঘটনাস্থলে রেলের ইঞ্জিনিয়ার এবং শীর্ষ আধিকারিকরা উপস্থিত হন। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন তাঁরা। রেললাইনের উপর থেকে পাথরগুলি সরানো হয়। তারপর ট্রেনটিকে গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা করানো হয়। কিন্তু প্রশ্ন হল, কারা এবং কি উদ্দেশ্যে এইভাবে পাথর রেখে গেল ?
রেললাইনের উপর পাথর রাখার ঘটনা বেড়েই চলেছে। ইচ্ছাকৃতভাবে এই পাথর রেখে দেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে রেলের তদন্তে। এর ফলে যে কোনও মুহূর্তে বড় দুর্ঘটনার কবলে পড়তে হতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছে রেল। যদিও এই বিষয়কে রুখে দেওয়ার জন্য রেল নানা পদক্ষেপও করেছে।
কিন্তু তার পরেও এই ধরনের ঘটনা খুব একটা কমেনি। এই ধরনের ঘটনা বার বার ঘটায় প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, তা হলে কি কোনও বড়সড় নাশকতার পরিকল্পনা চলছে? সেই উত্তর খুঁজতে তদন্ত শুরু করেছে রেল।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন