সমকালীন প্রতিবেদন : আমাদের প্রতিবেশী লালগ্রহ অর্থাৎ মঙ্গলে প্রাণ ও জলের হদিশ পাওয়ার পথে পা বাড়িয়েছে একাধিক দেশ। ভারতের তরফেও সফলভাবে মঙ্গলঅভিযান চালানো হয়েছে। তবে মঙ্গলে পা রাখার বিষয়ে কিন্তু এগিয়ে আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা।
নাসা প্রথম মঙ্গলে অভিযান চালায় ২০১২ সালে। সেই বছর মঙ্গলের লাল মাটিতে সফলভাবে অবতরণ করে ‘কিউরিওসিটি রোভার’। এরপর ২০১৮ সালে মঙ্গলের বুকে নামে নাসার মহাকাশযান ‘ইনসাইট’।
তারপর ২০২০ সালের ৩০ জুলাই আমেরিকার ফ্লোরিডার এয়ার স্টেশন থেকে অ্যাটলাস ফাইভ লঞ্চ ভেহিকেলে মঙ্গলে পাড়ি দেয় নাসার রোভার ‘পারসিভের্যান্স’।
৬ মাস ১৮ দিন পর সেই ‘পারসিভের্যান্স’ নামে মঙ্গলের মাটিতে। বিজ্ঞানীরা সেই সময় জানান যে, এই অভিযানের সবচেয়ে কঠিন ছিল অবতরণের শেষ সাত মিনিট। তবে সব প্রতিকূলতা জয় করে মঙ্গলের মাটিতে সফলভাবে পা রেখেছিল ‘পারসিভের্যান্স’।
আর এবার এই পারসিভের্যান্স-এর মুকুটে উঠে এল নতুন এক শিরোপা। এবার মঙ্গলের মাটিতে 'স্বাবলম্বী' হল নাসার যান। অর্থাৎ, মঙ্গলের লালমাটিতে একাই এক পা এক পা করে এগিয়ে গেল এই রোভার।
এতদিন পারসিভের্যান্স রোভার মানব-নিয়ন্ত্রিত ছিল। নাসার কন্ট্রোলরুম থেকে তাকে মঙ্গলের রুক্ষ জমিতে ‘অপারেট’ করতেন বিজ্ঞানীরা। কিন্তু এই প্রথম লালগ্রহের মাটিতে সে নিজে নিজেই হাঁটল।
অবশ্য এক বার নয়। তিন বারের চেষ্টায় সে পেরলো বাধা, এগোতে পারলো কয়েক কদম। পুরোটাই অবশ্য নিজের কম্পিউটার পাইলট ‘অটোন্যাভ’-এর সাহায্যে। রোভারকে সে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছে ‘স্নোড্রিফট পিক’ধরে।
১,৭০০ ফুটের বেশি চওড়া সেই এলাকায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে নানা আকারের বোল্ডার। ফলে, জায়গাটা যে যথেষ্ট পাথুরে, সে কথা বলাই বাহুল্য। ওই অসমান জায়গা ধরেই, নিজের চেষ্টায় এগিয়ে গিয়েছে রোভার।
কিন্তু মঙ্গলের বুকে কি কোনওদিন প্রাণ ছিল? থাকলে কত কোটি বছর আগে? এখন কি কোনও প্রাণ টিকে আছে লালগ্রহে? এইসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে লালগ্রহে প্রাণের সন্ধান করছে ‘পারসিভের্যান্স’। সেইসঙ্গে খোঁড়াখুঁড়ি করে মাটি এবং পাথর সংগ্রহ করার কাজও রয়েছে তার।
জানা গেছে, ৪৩টি টেস্ট টিউবে সেই নমুনা সংগ্রহ করে ২০২৬ সালে নাসার পরবর্তী অভিযানে সেই টেস্ট টিউবগুলি পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনার পরিকল্পনা রয়েছে। তাই নাসার এই অভিযানকে ঘিরে সম্ভাবনার স্তর যে অনেকটাই পুরু, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন