সমকালীন প্রতিবেদন : চন্দ্রযান ৩-এর ঐতিহাসিক সাফল্যের পর মহাকাশ গবেষণায় বিশ্বে নয়া দিগন্তের উন্মোচন করেছে ভারত। গত আগস্ট মাসে যেন ভারতের কাছে সাফল্যের মাস হয়ে রয়ে গেছে। কারণ ২৩ আগস্ট বিক্রম চাঁদে ল্যান্ড করার পরেই একদিকে যেমন প্রজ্ঞান রোভার চাঁদ থেকে টাটকা তাজা ছবি পাঠাচ্ছে, ঠিক তখনই অন্যদিকে পরবর্তী মুন মিশনের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছিল ইসরো। আর এবার এক বড়সড় আপডেট এলো চন্দ্রযান-৪ নিয়ে।
সম্প্রতি, ইসরোর প্রধান এস সোমনাথ বলেন যে, বিক্রমের দ্বিতীয় সফট ল্যান্ডিংয়ের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়েই পরবর্তী চন্দ্রাভিযানের পরিকল্পনা করা হবে। সেই অভিযানে চাঁদের থেকে নমুনা সংগ্রহ করে মহাকাশযানটিকে পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হবে। অর্থাৎ হপ ল্যান্ডিংয়ের সাফল্যেই পরবর্তী চাঁদ মিশনের অঙ্ক কষতে শুরু করেছে ভারত।
কি এই হপ ল্যান্ডিং? উল্লেখ্য, গত ৩ সেপ্টেম্বর সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ একটি ভিডিয়ো পোস্ট ক'রে ইসরো জানিয়েছিল, চাঁদের মাটি থেকে শূন্যে ওড়ানো হয় বিক্রমকে। চন্দ্রযান ৩-এর ল্যান্ডারের সঙ্গে থাকা ইঞ্জিনকে চালু করা হয়।
এরপর সেই ল্যান্ডারকে প্রায় ৪০ সেন্টিমিটার উচ্চতায় ওড়ানো হয়। লাফ দিয়ে আগের জায়গা থেকে প্রায় ৩০ থেকে ৪০ সেন্টিমিটার দূরে সফলভাবে অবতরণ করে বিক্রম। এই পরীক্ষা যে বেশ তাৎপর্যপূর্ণ, তা তখনই জানিয়ে দিয়েছিল ইসরো। বিক্রমের 'হপ এক্সপেরিমেন্ট' নিয়ে ইসরোর তরফে জানানো হয়েছিল, ভবিষ্যতে চাঁদে মানব অভিযান করলে তার সাফল্যের জন্য এই পরীক্ষা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
আর এবার ইসরো প্রধান বললেন, 'পরবর্তী অভিযানের জন্য এখনও কোনও নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করা হয়নি। তবে আমরা আমাদের সিস্টেমগুলিকে এমনভাবে তৈরি করার জন্য কাজ করছি, যাতে এটি একটি ফিরতি ফ্লাইটে পৃথিবীতে ফিরতে পারে। আমাদের হপ এক্সপেরিমেন্ট একটি বৃহত্তর পরিকল্পনার অংশ ছিল।'
তবে ইসরোর পরবর্তী মুন মিশন বেশ রোমহর্ষক হতে পারে। কারণ, এমনটা শোনা গিয়েছিল যে চাঁদের বুকে ভারত একলা নয়, এবার ইসরোর সঙ্গে চাঁদে পাড়ি দেবে জাপানও। জাপানের স্পেস এজেন্সি জাক্সার সঙ্গে হাত মিলিয়ে ইসরো তৈরি করছে LUPEX. যার সম্পূর্ণ অর্থ লুনার পোলার এক্সপ্লোরেশন মিশন। এই মিশনের নাম দেওয়া হয়েছে চন্দ্রযান-৪।
সূত্রের খবর, সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী ২০২৫ সালে উৎক্ষেপণ হবে চন্দ্রযান ৪-এর। এই অভিযানে কেবলমাত্র দক্ষিণ নয়, চাঁদের দুই মেরুতেই ঘুরবে চন্দ্রযান-৪, এমনটাই জানা গেছে সূত্র মারফত। চাঁদের এই দুই মেরু এলাকায় জলের অস্তিত্ব রয়েছে কি না, সেদিকেই তীক্ষ্ণ নজর ইসরোর। তাই আরও বড়সড় ইতিহাস যে ভবিষ্যতে লুকিয়ে রয়েছে, তা বলাই যায়।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন