সমকালীন প্রতিবেদন : দুই পুরুষের মালাবদল কিংবা দুই মহিলার সিঁদুরদান, দুটি ঘটনাই আমাদের সাধারণ সমাজের সঙ্গে যেন খাপ খায় না সহজে। একমাত্র পুরুষ ও মহিলার সম্পর্ককেই স্বীকৃতি দেয় সমাজের সিংহভাগ মানুষ। তবে দুই পুরুষের প্রেম কিংবা দুই নারীর অন্তরঙ্গ সম্পর্ককে সেভাবে মেনে নেওয়া হয় না।
তাও এই বিষয়টি রয়ে গেছে সমাজের মধ্যেই। তাই হয়তো আজও অনেকেই সমাজের প্রথা ভেঙে সমকামী বিয়ের পথে পা বাড়ান। কিন্তু সমাজকে বুড়ো আঙুল দেখানো গেলেও আইন ছাড়া কোনো পদক্ষেপ সেভাবে গুরুত্ব পায় না। তাই দীর্ঘদিন ধরেই সমকামী বিয়ের আইনি স্বীকৃতির দাবি জানিয়ে আসছেন অনেক যুবক–যুবতী।
আর এবার এই মামলায় চূড়ান্ত রায় শোনালো সুপ্রিম কোর্ট। সমকামী বিয়েকে বৈধতা না দিলেও একাধিক বিষয়ে ছাড়পত্র দিলেন সর্বোচ্চ ন্যায়ালয়ের বিচারপতিরা। মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ থেকেই শোনানো হল এই ঐতিহাসিক রায়। কি সেই রায়?
সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের বিচারপতিরা সকলে এই বিষয়ে সম্মত হয়েছেন যে, সমকামী দম্পতিদের বিয়ে করার কোনও মৌলিক অধিকার নেই। শুধু তাই নয়, বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠতার সঙ্গে বলেছে যে, সমকামী বিবাহের বিষয়ে আইনসভার সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।
সুপ্রিম কোর্ট সমকামীদের বিয়েকে হয় তো স্বীকৃতি দেয়নি। কিন্তু তার মানে এমনটা ভাবার কোনও কারণ নেই যে, সমকামীতাই বেআইনি। বরং আদালত কেন্দ্র এবং পুলিশের উদ্দেশে একাধিক নির্দেশিকা দিয়েছে। তাতে আগামিদিনে সমকামী যুগলদের প্রতি বৈষম্যের অবসান ঘটানোর লক্ষ্য স্থির করা হয়েছে। সকলের মতো সমানাধিকার এবং ব্যবহার পাবেন তাঁরা।
সুপ্রিম কোর্ট এই নির্দেশিকায় জানিয়েছে যে, কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারকে সমকামীদের অধিকার নিশ্চিত করতে যথাযথ পদক্ষেপ করতে হবে। এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে মুখ্য সচিবের সভাপতিত্বে একটি কমিটি গঠন করতে হবে।
এছাড়াও, সমকামীদের জয়েন্ট ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের জন্য নমিনেশন করা, আর্থিক সুবিধা সংক্রান্ত অধিকার নিশ্চিতকরণ, পেনশন, গ্র্যাচুইটি ইত্যাদি বিষয়গুলিও এই কমিটি বিবেচনা করবে বলে জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। তাই এই রায় যে ঐতিহাসিক এক রায়, তাতে কোনও সন্দেহের অবকাশ নেই।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন