সমকালীন প্রতিবেদন : মঙ্গলবার থেকে ক্রমশ ভয়াল রূপ ধারণ করছে পাহাড়ি নদী তিস্তা। তার স্রোতের টান এতটাই বীভৎস যে তার টানেই ভেসে যাচ্ছে বাড়ি, ঘর, গাছপালা সমস্ত কিছু। আর এর জেরেই জলে ভেসে নিখোঁজ হলেন ২৩ জন সেনা জওয়ান।
সেনা সূত্রে খবর, সিংটামের কাছে বারডাঙে সেনার একটি গাড়ি দাঁড়িয়ে ছিল। তখন হঠাৎ করে হড়পা বান চলে আসে। যার জেরে ওই গাড়িগুলি ভেসে যায়। চুংথাং বাঁধ থেকে জল ছাড়ার জেরে তিস্তায় তৈরি হয়েছে ওই হড়পা বান। নদীর জলস্তর ১৫ থেকে ২০ ফুট বেড়ে গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
উল্লেখ্য, গতকাল রাতে সিকিমে মেঘভাঙা বৃষ্টি শুরু হয়। যার জেরে বেড়ে যায় তিস্তার জল। উপচে পড়ে লোনাক লেক। ওই লেকের জল হু হু করে তিস্তায় ঢুকতে শুরু করায় বাঁধে বিপত্তি। তখনই নদী ফুঁসে উঠে আসে হড়পা বান। এই ঘটনার জেরে বিশাল এলাকাজুড়ে নামতে শুরু করেছে ধস।
সূত্রের খবর, মূল ভূখণ্ড থেকে চুংথাং এলাকা বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। হড়পা বানে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে রংপো, মেল্লি, সিংটামের। গতকাল রাত আড়াইটে নাগাদ জলের তোড়ে সিংটামের কাছে ইন্দ্রাণী সেতু ভেসে যায়।
১০ নম্বর জাতীয় সড়কের একটা অংশের ক্ষতি হয়। ধসে গিয়েছে ওই রাস্তার বেশ কিছু জায়গা। ফলে আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ওই সড়ক, যা সিকিমের অন্যতম লাইফলাইন হিসেবে পরিচিত।
এদিকে, সিকিমের চুংথামে ব্যাপক জলস্ফীতি হয়েছে। পরিস্থিতি এতটাই ভয়ঙ্কর যে সেখানে আস্ত একটি লেক ভেঙে পড়েছে। সেই জল গিয়ে ঢুকছে তিস্তায়। আর জল ধরে রাখতে না পেরে তিস্তা ব্যারেজ থেকে ছাড়া হয়েছে জল। স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, মাঝরাতে আচমকাই জলস্তর দোতলা বাড়ির সমান বেড়ে গিয়েছে। এলাকার জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
এই প্রেক্ষিতে ইতিউতি প্রশ্ন উঠছে, তিস্তার এই ধ্বংসলীলার কারণ কী? পরিবেশবিদদের একটি অংশের অবশ্য দাবি, উত্তরাখণ্ডের পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি হচ্ছে সিকিম পাহাড়েও। অনিয়ন্ত্রিত নগরায়ন এবং নদীর উপর ড্যাম তৈরির ফল ভুগতে হচ্ছে। পরিবেশবিদেরা সতর্ক করছেন, এখনই সতর্ক না হলে আরও বড় বিপদ অপেক্ষা করছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন