সমকালীন প্রতিবেদন : ধূমকেতু নিয়ে মানুষের কৌতূহল এবং বিস্ময়বোধ প্রায় পাঁচ হাজার বছরের পুরোনো। সৌরজগতের এক বিচিত্র বস্তু হল ধূমকেতু। মধ্যযুগ পর্যন্ত মানুষ বুঝতেই পারেনি ধুমকেতুর বিষয়টি কি। তবে তারপর উদ্ঘাটিত হয় ধূমকেতু রহস্যের।
ধূমকেতু হল মূলত হিমায়িত গ্যাস, শিলা এবং ধূলিকণার বরফের দেহ। আর এমনই একটি পরিচিত ধূমকেতু হল নিশিমুরা। গত ১১ অগাস্ট এই ধূমকেতুর সন্ধান পান জাপানি জ্যোতির্বিজ্ঞানী হিদিও নিশিমুরা। অত্যাধুনিক একটি টেলিস্কোপ ক্যামেরায় এর ছবি তোলেন তিনি। তাঁর নামেই ধূমকেতুটির নাম রাখা হয়।
গবেষকরা জানিয়েছেন, নিশিমুরার আকার গোল। এটি মূলত বরফ এবং বিভিন্ন ধরনের শিলা দিয়ে তৈরি। ধূমকেতুটি লম্বায় প্রায় এক কিলোমিটার বলে জানা গিয়েছে। এরপর গত ১১ সেপ্টেম্বর দেখা মেলে তার। এতো অল্প সময়ের মধ্যেই যে ফের তাকে দেখা যাবে, এমনটা বোধ হয় স্বপ্নেও ভাবেননি জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা।
কিন্তু সবাইকে চমকে দিয়ে আবির্ভূত হয়েছিল এই ধূমকেতু। ফলে দুসপ্তাহ আগেই এক বিরল দৃশ্যের সাক্ষী থেকেছিল বিশ্ববাসী। দু সপ্তাহ আগের এক মঙ্গলবারে পৃথিবীকে অতিক্রম করে নিশিমুরা ধূমকেতু। অতি শক্তিশালী টেলিস্কোপে সেই ছবি লেন্সবন্দিও করেন মহাকাশ গবেষকদের একাংশ।
সূত্রের খবর, খালি চোখেও কিছু কিছু জায়গা থেকে সবুজ রঙের ধূমকেতুটিকে দেখা গিয়েছে। পৃথিবীকে পেরিয়ে সূর্যের গা ঘেঁষে যাওয়ার সময় বাঁধল বিপত্তি। সৌরঝড়ের হলকা গায়ে লেগে খোয়া গেল ধূমকেতুর লেজ। সৌরঝড়ে দগ্ধ হল ধূমকেতু নিশিমুরা। আর মহাজাগতিক সেই মুহূর্ত ধরা পড়ল ক্যামেরায়।
সৌরজগতের ঘটনাক্রমের দিকে নজর চালানোর জন্য মহাশূন্যে স্টিরিও-এ মহাকাশযান পাঠিয়েছে আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। আর সেই ক্যামেরাতেই ধরা পড়ল এই বিরল ঘটনার দৃশ্য। সূর্য থেকে উৎসারিত সৌরকণার ঢেউয়ে ঝলসে গেল ধূমকেতুর লেজ।
জ্যোতির্বিজ্ঞানের ভাষায় এটিকে করোনাল মাস ইজেকশন বলা হয়। আগ্নেয়গিরি থেকে যেমন অগ্ন্যুৎপাত ঘটে, বেরিয়ে আসে লাভা, তেমনই সূর্যপৃষ্ঠ থেকে ছিটকে আসে সৌরকণা, যার গতিবেগ ঘণ্টায় কয়েক লক্ষ মাইল। ওই সৌরকণাগুলি একত্রিত হয়ে আছড়ে পড়ে ঢেউয়ের আকারে। আর এভাবেই মহাকাশ সাক্ষী হয়ে রইল এই বিরল মহাজাগতিক ঘটনার।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন