সমকালীন প্রতিবেদন : শ্বশুরের বিভিন্ন নথি জাল করে ঋণ নিয়ে শ্বশুরবাড়ি থেকে চম্পট দিল গুণধর জামাই। বেশ কয়েক মাস আত্মগোপন করে থাকার পর অবশেষে পুলিশের হাতে ধরা পড়ল অভিযুক্ত জামাই। বনগাঁ থানা এলাকার এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালে উত্তর ২৪ পরগনার বাগদা থানার বানেশ্বরপুর এলাকার যুবক উজ্জ্বল কুমার দাসের সঙ্গে বিয়ে হয় বনগাঁর খয়রামারি এলাকার এক যুবতীর। ২০২১ সালে স্ত্রী মারা যাওয়ার পর থেকে ওই যুবক বনগাঁয় শ্বশুরবাড়িতে থাকতে শুরু করে।
এদিকে পেশায় সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার জামাই উজ্জ্বলের মাসিক আয় নাকি ৯০ হাজার টাকা। তারপরেও তার বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে। আর এই অভিযোগ দায়ের করেছেন খোদ ওই যুবকের শ্বশুরমশাই।
বনগাঁর খয়রামারি এলাকার বাসিন্দা, অভিযুক্ত যুবকের শ্বশুরমশাই ললিত মোহন মজুমদারের অভিযোগ, 'মেয়ের অকাল মৃত্যুর পর মেয়ের শোক ভুলতে জামাইকে নিজের বাড়িতে নিয়ে আসি। বিশ্বাস করে তার উপর অনেক কিছুই ছেড়ে দিয়েছিলান।'
বছরখানেক আগে ললিতমোহনবাবু হঠাৎ করেই খেয়াল করেন যে, তাঁর ভোটার, প্যান, আধার কার্ডের সমস্ত নথি তাঁর জামাইয়ের কাছে। সাময়িকভাবে মনে প্রশ্ন জাগলেও বিষয়টিকে তখন তিনি গুরুত্ব দেন নি। এর বেশ কিছুদিন পর হঠাৎ করেই এক অপরিচিত ব্যক্তি ফোন করে বলেন যে, তিনি যে লোন নিয়েছেন, তার টাকা কেন পরিশোধ করছেন না।
এমন কথা শুনে ললিতমোহনবাবু বেশ অবাক হয়ে যান। কারণ, তিনি কোনও লোন নেন নি। তারপরেও কেন তার কাছে ফোন এলো। বিষয়টি নিয়ে জামাইকে জিজ্ঞাসা করতেই সে বলে যে, ভুল করে হয়তো কেউ ফোন করেছে। বিষয়টি সে দেখে নিচ্ছে।
এর কিছুদিন পর জামাই বলে যে, বিষয়টি সে মিটিয়ে দিয়েছে। আর কোনও সমস্যা নেই। এরপর গত বছরের ১৬ আগস্ট থেকে হঠাৎ করেই বেপাত্তা হয়ে যায় জামাই উজ্জ্বল। আর তখনই খটকা লাগে শ্বশুর ললিতমোহনের।
এরপর তিনি খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন যে, তাঁর বিভিন্ন নথি এবং সই জাল করে জামাই উজ্জ্বল ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা লোন নিয়েছে। তার দু এক কিস্তি শোধ করলেও বাকি টাকা সে আর শোধ করে নি। শুধু তাই নয়, তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকেও একাধিকবার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে জামাই।
এরপর ললিতমোহনবাবু সাইবার ক্রাইম থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে বুধবার বিকেলে কলকাতা থেকে উজ্জ্বলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বৃহস্পতিবার তাকে বনগাঁ আদালতে পেশ করা হয়। আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বিচারকের নির্দেশে উজ্জ্বলকে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন