সমকালীন প্রতিবেদন : গত ২৩ অগস্ট চাঁদের দক্ষিণ মেরু ‘শিবশক্তি’তে নেমেছিল ভারতের চন্দ্রযান-৩। পালকের মতো ভেসে চাঁদের মাটি ছুঁয়েছিল অবতরণ যান বা ‘ল্যান্ডার’ বিক্রম। পরে তার ভিতর থেকে চাঁদের মাটিতে গড়িয়ে নামে অভিযাত্রী ‘রোভার’ প্রজ্ঞান। সেখানেই ১৪ দিন ধরে চলে নানান গবেষণা। বিক্রম ও প্রজ্ঞান একযোগে ও এক রহস্যের উন্মোচন করেছে।
তবে তারপর রাত নামে চাঁদের বুকে। তখনই ঘুমের দেশে ঢলে পড়ে দুই বন্ধু। এই অবস্থায় বিজ্ঞানীরা অবশ্য জানতেন, চাঁদে যখন রাত নামবে, তখন বিক্রম আর প্রজ্ঞানের ব্যাটারির শক্তি ফুরিয়ে আসবে। লোপ পাবে কাজ করার ক্ষমতাও।
কারণ, সূর্যের আলো ছাড়া ব্যাটারি রিচার্জ হওয়াই সম্ভব নেই বিক্রম এবং প্রজ্ঞানের। স্বাভাবিকভাবেই শক্তি হারিয়ে নিস্তব্ধ হয়ে যাওয়ার কথা তাদের। সব জেনেও বিজ্ঞানীরা শেষ পর্যন্ত আশা ছাড়তে পারেননি।
এদিকে, গত ২১ সেপ্টেম্বর চাঁদে সূর্য উঠেছে। তার পর থেকে কেটে গিয়েছে কয়েকটি দিন। কিন্তু এই কয়েক দিনে ইসরো বার বার সঙ্কেত পাঠালেও ফিরতি সঙ্কেত আসেনি বিক্রম আর প্রজ্ঞানের কাছ থেকে।
এই কারণে চাঁদের বুকে বিক্রম ও প্রজ্ঞানের বিকল হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে। কারণ, চাঁদে যখন রাত নামে তখন তাপমাত্রা হিমাঙ্কের ১৮০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত নেমে যায়। সেই প্রবল ঠান্ডায় ব্যাটারি-সহ অন্যান্য যন্ত্র বিকল হয়ে যাওয়ার ঘটনা মোটেও অস্বাভাবিক নয়।
তবে এটা মোটেও ব্যর্থতা নয়। কারণ, চাঁদের মাটিতে ইতিমধ্যেই যা যা কাজ করার, সে সব দায়িত্বই পালন করে ফেলেছে চন্দ্রযান-৩ অভিযানের দুই সদস্য। এর পরে যদি ঘুম ভেঙে তারা কাজ করে, তবে তা হবে ইসরোর বাড়তি পাওনা।
এমনই অভিমত প্রকাশ করলেন ইসরো প্রধান এস সোমনাথ। তিনি বলেন, ‘যদি রোভার প্রজ্ঞান নাও উঠতে পারে, তাহলেও ঠিক আছে। কারণ যা আশা করা হয়েছিল, তা করেছে প্রজ্ঞান।’
তবে আপাতত গগনযান নিয়ে তোড়জোড় শুরু হয়েছে ইসরোর। ইসরোর প্রধান জানিয়েছেন, আপাতত তাঁরা পরবর্তী মিশনের দিকেও এগোচ্ছেন। তাই একথা বলাই যায় যে, আগামীতে হয়তো আরও অনেক বেশি সাফল্যের দিন অপেক্ষা করছে ইসরোর বিজ্ঞানী এবং আপামর ভারতবাসীর জন্য।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন