সমকালীন প্রতিবেদন : এবার হয়তো পুরোপুরিভাবে বদলে যেতে চলেছে ভারতের ভবিষ্যৎ। কারণ, ভারতের চন্দ্রযান-৩ অভিযানেই এসে গেলো চূড়ান্ত সাফল্য। এবার চাঁদের মাটিতে অক্সিজেনের সন্ধান পেল রোভার প্রজ্ঞান। চাঁদের যে অন্ধকারাচ্ছন্ন দক্ষিণ মেরুকে নিয়ে এতদিন এত জল্পনা চলছিল, সেখানেই এবার একের পর এক আবিষ্কার করেছে রোভার প্রজ্ঞান। আর চাঁদের বুকে এই সাফল্য কিন্তু ভারতের ভবিষ্যৎকে আরো বেশি মজবুত করে তুলতে পারে।
২৩ আগস্ট, বুধবার চাঁদের বুকে তৈরি হয়েছে ইতিহাস। আর ঠিক তার পরের বুধবার বিশ্ববাসীকে চমকে দিলো ইসরো। এবার চন্দ্রপৃষ্ঠে সালফার, অক্সিজেন, ক্যালসিয়াম, টাইটেনিয়াম, ম্যাগনেসিয়ামের মতো যৌগ খুঁজে পেল চন্দ্রযান ৩-র রোভার প্রজ্ঞান।
সেইসঙ্গে চন্দ্রপৃষ্ঠে আরও একাধিক যৌগের হদিশ মিলেছে বলে জানিয়েছে ইসরো। ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, হাইড্রোজেন আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সেই হাইড্রোজনের যদি সন্ধান পাওয়া যায়, তাহলে জলের উপস্থিতির বিষয়ে ধারণা পাওয়া যাবে।
সম্প্রতি একটি বিবৃতিতে ভারতীয় মহাকাশ সংস্থা ইসরোর তরফে জানানো হয়েছে, চন্দ্রযান ৩-র রোভার প্রজ্ঞানে 'লেসার-ইনডিউসড ব্রেকডাউন স্পেকট্রোস্কপি' আছে। যা চাঁদের দক্ষিণ মেরুর কাছে চন্দ্রপৃষ্ঠে কী কী যৌগ আছে, সেটা নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়েছে 'লেসার-ইনডিউসড ব্রেকডাউন স্পেকট্রোস্কপি'।
উল্লেখ্য, এই 'লেসার-ইনডিউসড ব্রেকডাউন স্পেকট্রোস্কপি' হল একটি বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়া, যা লেসার পালসের মাধ্যমে বিভিন্ন উপকরণের গঠন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখে। সেই প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই চন্দ্রপৃষ্ঠে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়েছে 'লেসার-ইনডিউসড ব্রেকডাউন স্পেকট্রোস্কপি'।
কিন্তু ঠিক কী কী পদার্থ মিলেছে চন্দ্রপৃষ্ঠে? ইসরোর তরফে জানানো হয়েছে, প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষায় চন্দ্রপৃষ্ঠে অ্যালুমিনিয়াম, সালফার, ক্যালসিয়াম, লোহা, ক্রোমিয়াম এবং টাইটেনিয়ামের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। সেইসঙ্গে ম্যাগনেসিয়াম, সিলিকন এবং অক্সিজেনের সন্ধান মিলেছে।
হাইড্রোজেনের সন্ধানে বিস্তারিতভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে বলে জানানো হয়েছে। ইসরোর তরফে এমন সময় সেই মন্তব্য করা হয়েছে, যখন ভারতীয় মহাকাশ সংস্থার তরফে জানানো হয় যে, চাঁদের আরও রহস্য উদঘাটন করছে রোভার প্রজ্ঞান। যা গত ২৩ অগস্ট চাঁদের মাটিতে ল্যান্ডার বিক্রমের অবতরণের পর বেরিয়ে আসে।
চন্দ্রযান ৩-এর এই আবিষ্কারগুলি আগামীদিনে মহাকাশ গবেষণার ক্ষেত্রে এক নয়া ইতিহাস রচনা করবে কিংবা পুরনো বহু বৈজ্ঞানিক সূত্র বদলে দিতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে। অদূর ভবিষ্যতে এই অজানা-অচেনা চাঁদে মানুষের বসতি গড়ে উঠতে পারে কি না, সেই নিয়ে ইতিমধ্যেই তথ্যতালাশ শুরু করে দিয়েছেন তাবড় বিজ্ঞানীরা। আর এই সাফল্য আমাদের সকলের।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন