সমকালীন প্রতিবেদন : ফোর, থ্রি, টু, ওয়ান, জিরো- বলতেই চন্দ্রযান ৩ রকেট পাড়ি দিল চাঁদে। গর্বে, আবেগে গায়ে কাঁটা দেওয়া সেই কাউন্টডাউন যাঁর গলা থেকে বেরতো, ইসরো-র সেই বিজ্ঞানী প্রয়াত হলেন। আজ সোমবার ভোরে কার্ডিয়াক অ্যারেস্টে মৃত্যু হল বিজ্ঞানী এন ভালারমতির।
শ্রীহরিকোটায় চন্দ্রযান ৩ চাঁদে পাড়ি দেওয়ার কাউন্টডাউন করেছিলেন ভালারমতীই। তার গলায় সেই ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী হয়েছিলেন বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ। কিন্তু তিনি আর কোনোদিন করবেন না কাউন্টডাউন।
ভালারমতির মৃত্যুতে শোকজ্ঞাপন করে ভারতের ইসরোর প্রাক্তন ডিরেক্টর পিভি বেঙ্কটাকৃষ্ণন এক্স হ্যান্ডলে লেখেন, 'শ্রীহরিকোটায় ইসরোর পরবর্তী মিশনগুলির কাউন্টডাউন যখন চলবে, সেই সময় ভালারমতি ম্যাডামের কণ্ঠ আর শোনা যাবে না। খুবই দুঃখিত। প্রণাম।' কিন্তু কে এই ভালারমতি?
১৯৫৯ সালের ৩১ জুলাই তামিলনাড়ুর আরিয়ালুর গ্রামে ভালারমতির জন্ম। ১৯৮৪ সালে ইসরো-তে যোগ দেন। দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি ভারতের প্রথম র্যাডার স্যাটেলাইট বা রিস ২০১২ সালে সফলভাবে উপগ্রহে প্রতিষ্ঠিত হয়। এই অভিযানের দায়িত্বে ছিলেন ভালারমতি।
এ ছাড়াও ইসরোর একাধিক অভিযানে ধারাভাষ্য দিতে শোনা গিয়েছে তাঁকে। বিজ্ঞান এবং গবেষণায় বিশেষ অবদানের জন্য তামিলনাড়ু সরকার তাঁকে আব্দুল কালাম পুরস্কার দিয়ে সম্মানিত করে। উল্লেখ্য, ইসরো-র যে কোনও অভিযানে ধারাভাষ্য ও কাউন্টডাউন শোনা যেত ভালারমতির গলাতেই। চন্দ্রযান যেদিন চাঁদের মাটি ছুঁল, সেদিনও ধারাভাষ্য করেছিলেন ভালারমতিই।
প্রসঙ্গত, আপাতত ঘুমিয়ে পড়েছে চন্দ্রযান-৩-এর রোভার প্রজ্ঞান। কারণ, চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে এখন রাত চলছে। যেটি ১৪ দিন ধরে থাকবে। তাই এখন আর কোনও কাজ প্রজ্ঞান করতে পারবে না। তাঁকে ঘুম পারিয়ে রাখা হয়েছে। চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে আবার দিন ফিরলে কাজ করতে শুরু করবে প্রজ্ঞান।
কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, ঠিক মতো ঘুম ভাঙবে তো প্রজ্ঞানের ? যদি ঘুম না ভাঙে তাহলে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে বরাবরের জন্য রয়ে যাবে প্রজ্ঞান এবং রোভার। গোটা ভারতবাসীর কামনা, বিজ্ঞানী ভালারমতির মতো যেন চির ঘুমের দেশে চলে না যায় প্রজ্ঞান। যেখানেই থাকুন, ভালো থাকুন বিজ্ঞানী ভালারমতি।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন