সমকালীন প্রতিবেদন : ভারতের উত্তর থেকে দক্ষিণ, পূর্ব থেকে পশ্চিম– সব দিকেই রয়েছে শিবের মন্দির। নানা নামে, নানা উপায়ে ভারতে পুজো হয় মহাদেবের। এর মধ্যে কেদারনাথ, অমরনাথ, সোমনাথ, মহাকাল মন্দির হল জগতবিখ্যাত।
তবে পাকিস্তানে আজও রয়েছে জাগ্রত এক শিব মন্দির। পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের চকবালে এই মন্দিরটি অবস্থিত। এই মন্দিরের ইতিহাস পাঁচ হাজার বছরের পুরোনো। বলা হয়, মহাভারতের সময় তৈরি হয়েছিল এই কাটাসরাজ মন্দির।
ভক্তদের বিশ্বাস, ভগবান শিব তাঁর স্ত্রী সতীর সঙ্গে এখানেই বসবাস করতেন। সতীর মৃত্যুর পর তাণ্ডব করেছিলেন শিব। সেই সময় শোকার্ত শিবের অশ্রু নাকি এখানে পড়ে। শিব এতটাই কেঁদেছিলেন যে, তাঁর চোখের জলে এখানে একটি পুকুর তৈরি হয়ে যায়।
বলা হয়, রাজস্থানের পুষ্করের সরোবরটিও শিবের অশ্রু থেকেই তৈরি হয়েছিল। কোটি কোটি হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষের কাছে পাকিস্তানের এই মন্দিরের গুরুত্ব রয়েছে। তবে এই মন্দিরে কোনও বিগ্রহ নেই। ভক্তরা এখানে শিবের শোকের পুজো করেন। বলা হয়, মন্দিরের এই কুণ্ডে স্নান করলে সব পাপ ধুয়ে যায়। একইসঙ্গে মোক্ষলাভও হয় ভক্তদের।
কথিত আছে, সাতগ্রহের অভয়ারণ্যেই পাণ্ডবরা তাঁদের নির্বাসনের দীর্ঘ ১২ বছর কাটিয়েছিলেন। এই কাটাসরাজ মন্দিরকে সাতগ্রহও বলা হয়। কারণ, এই স্থানে পুরোনো মন্দিরের একটি সমষ্টি রয়েছে।
পাশাপাশি, এই মন্দিরটির ঐতিহাসিক তাৎপর্যও রয়েছে। ১৮৭২-৭৩ সালে ভারতীয় প্রত্নতাত্ত্বিক জরিপ বিভাগের প্রথম মহাপরিচালক অ্যালান কানিংহাম বলেছিলেন, জ্বালামুখির পর কাটাসরাজ মন্দির হিন্দুদের কাছে অন্যতম পবিত্র স্থান।
এছাড়াও, এটি হিন্দুদের জন্য পাঞ্জাবের দ্বিতীয় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্থান। পাকিস্তানে মূলত ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসী মানুষজন বাস করলেও, সেখানে মন্দির ব্রাত্য নয়। কারণ, সেই দেশের নানা জায়গায় রয়েছে চোখ ধাঁধানো মন্দির। শিবের এই মন্দির হল এমনই এক ঐতিহাসিক মন্দির। তাই এই মন্দির আজও পবিত্র, আজও অটুট।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন