সমকালীন প্রতিবেদন : গত বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সকালে জাপানের তানেগাশিমা স্পেস সেন্টার থেকে স্লিম এবং রিসম নামের দু'টি মহাকাশযান নিয়ে চাঁদের পথে যাত্রা শুরু করে জাক্সা-র অতি শক্তিশালী রকেট। যা জোড়া নভোযানকে পৃথিবীর কক্ষপথে পৌঁছে দিয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
জাপানের এই চন্দ্র মিশনের কোড নেম 'মুন স্নাইপার'। যা চলতি বছরের ২৬ অগাস্ট শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্ত খারাপ আবহাওয়ার কারণে তা পিছিয়ে ২৮ অগাস্ট করা হয়। জাপান অ্যারোস্পেস এক্সপ্লোরেশন এজেন্সি বা জাক্সা চন্দ্র অন্বেষণে স্লিম ল্যান্ডার উৎক্ষেপণ করেছে ৭ সেপ্টেম্বর।
আর এই চন্দ্র মিশনটি যেমন জাপানকে বিশ্বের পঞ্চম দেশ হিসেবে চাঁদে অবতরণের গরিমা এনে দিতে পারবে, তেমনই নাসার আর্টেমিস মিশনে মূল্যবান ডেটাও দেবে। নাসা সম্প্রতি ক্রুড চন্দ্র মিশনে নামতে চলেছে।
সেই মিশনকে সহজতর করতে নাসা নানারকম চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। জাপানের এই মিশনের মাধ্যমে তারা চাইছিল ডেটা সংগ্রহ করতে। জাক্সা এবং নাসার সহযোগিতামূলক প্রচেষ্টায় স্লিম এগিয়ে চলেছে চাঁদের দিকে। আরও একটি চন্দ্র মিশনে নজর গোটা বিশ্বের।
তবে জাপান আরো বেশি সময় নেবে চাঁদের মাটিতে নামতে। জানা গেছে, প্রায় ১২০ দিন সময় লাগবে চাঁদের মাটি ছুঁতে। কিন্তু কেন এত সময় লাগছে তাদের? সূত্রের খবর, চন্দ্র অভিযানে ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো-কে পুরোপুরি অনুসরণ করছে জাপান অ্যারোস্পেস এক্সপ্লোরেশন এজেন্সি।
চন্দ্রযান ৩-র মতোই পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তিকে কাজে লাগিয়ে ধীরে ধীরে চাঁদের দিকে এগোচ্ছে টোকিওর জোড়া নভোযান। তার মূল কারণ হল, চন্দ্রযান ৩ এর ল্যান্ডার বিক্রম এবং রোভার প্রজ্ঞানের সঙ্গে জাপানের স্মার্ট ল্যান্ডারের কিছু মূলগত পার্থক্য রয়েছে।
বিক্রম এবং প্রজ্ঞানের তুলনায় এই দুই মহাকাশযানের ওজন অনেকটাই বেশি।এছাড়াও, চন্দ্রযান ৩ মিশনে ল্যান্ডার বিক্রমের মধ্যে রাখা হয় রোভার প্রজ্ঞানকে।
অন্যদিকে, জাপানের নভোযানে এই দুটিকে একসঙ্গে জুড়ে পৃথিবীর উপগ্রহে পাঠিয়েছে জাপান। ফলে চাঁদের পথে মহাশূন্যে জোড়া নভোযানের গতি বাড়ানো যথেষ্ট কঠিন। এছাড়াও, রাশিয়ার ব্যর্থতা ভাবাচ্ছে জাপানকে। চাঁদ মিশন শুরুর আগে মস্কোর ব্যর্থতার কারণগুলিও খুঁটিয়ে দেখেছে জাপান।
প্রসঙ্গত, গত শতাব্দীর ন'য়ের দশকে চাঁদে ল্যান্ডার অবতরণের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয় জাপান। এই ভুলগুলি থেকে শিক্ষা নিয়ে কোনও তাড়াহুড়ো করতে চাইছে না টোকিও। তাই তারাও এখন দিন গুনছে সফল হওয়ার।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন