সমকালীন প্রতিবেদন : ভারতের চন্দ্রযান-৩ কে ঘিরে গত আগস্ট মাসে লেখা হয়েছিল এই অবিশ্বাস্য ইতিহাস। চাঁদের কুমেরুতে সফল ল্যান্ডিং করার পর ভারতকে বাহবা দিয়েছিল গোটা বিশ্ব। সেই সময় পেরিয়েছে। তারপর গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হয়েছে ভারতের বিক্রম ও প্রজ্ঞান।
আশা ছিল যে আবার তারা দ্বিতীয় সূর্যোদয়েও সক্রিয় হয়ে উঠে কাজ শুরু করবে। কিন্তু সেই আশার প্রদীপ ক্রমেই নিভতে বসেছে। অনেক ডাকাডাকির পরও উঠছে না চন্দ্রযান-৩ এর ল্যান্ডার বিক্রম ও রোভার প্রজ্ঞান। গত ২২ সেপ্টেম্বর চাঁদের বুকে ভোরের আলো ফুটেছে। ১৪ দিন শেষে সূর্যের আলোয় আলোকিত হয়েছে চাঁদের মাটি। কিন্তু তাদের ওঠার নামগন্ধ নেই।
উল্লেখ্য, এই বিশেষ লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে চাঁদে নেমেছিল ল্যান্ডার বিক্রম। যাতে এক চন্দ্রদিন অর্থাৎ, পৃথিবীর হিসেবে ১৪ দিন কাজ করতে পারে সেভাবেই বানানো হয়েছিল চন্দ্রযান-৩ কে। সেই আয়ু ফুরিয়েছে। কর্মকালে অত্যন্ত ভালোভাবেই কাজ করেছে বিক্রম ও প্রজ্ঞান। কাজে কোনও ফাঁকি দেয়নি তারা।
বরং প্রত্যাশার থেকে বেশি কাজ করেছে। চাঁদের বুকে রাত্রি নেমে আসার সঙ্গে সঙ্গেই তাদেরকে ঘুম পাড়িয়ে দেয় ইসরো। ক্ষীণ হলেও আশা ছিল আবার যখন সকাল হবে চাঁদে, তখন তারা জেগে উঠবে। তবে সেই আশার আলোর ক্রমশই ফ্যাকাশে হচ্ছে। পৃথিবীর ডাকে সাড়া দিচ্ছে না দুই 'বন্ধু'।
তাহলে কি চাঁদের বুকেই সমাধি ঘটল দুজনের? এই সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না মোটেও। কারণ, দিনে সূর্যের আলো পড়লেও রাত নামলেই চাঁদের বুকে নেমে আসে মারাত্মক ঠান্ডা। সেই ঠান্ডা সহ্য করতে পারে না ভিতরের যন্ত্রগুলি। কাজ করার জন্য সক্ষম থাকতে পারে না সেগুলি। অতিরিক্ত ঠান্ডায় কার্যত 'বসে' যায় অনেক যন্ত্রাংশ।
ঠিক তেমনটাই হয়েছে চন্দ্রযান-৩ এর ক্ষেত্রেও, এমনটা অনুমান করছেন বিজ্ঞানীরা। তার কারণ হল, চাঁদে চরম পরিস্থিতি সহ্য করার জন্য ডিজাইন করা হয়নি চন্দ্রযান-৩ এর যন্ত্রগুলি। তাই তাপমাত্রা ২০০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নীচে নেমে গেলে তার জন্য কোনও ব্যবস্থা রাখা হয়নি আগে থেকে। তবে বিজ্ঞানীদের অল্প আশা ছিল, চাঁদের বুকে রাত শেষ হলে সূর্যের আলো পেয়ে আবার জেগে উঠতে পারে ল্যান্ডার ও রোভার।
সেই মতো ২২ সেপ্টেম্বর থেকে জাগানোর চেষ্টা চলছে তাদের। পৃথিবীতে বসে চন্দ্রযান-৩ এর কোনও সংকেত পাননি বিজ্ঞানীরা। ক্রমেই ফ্যাকাশে হচ্ছে আশার আলো। বিক্রম এবং প্রজ্ঞানের পুনরায় জেগে ওঠার সম্ভাবনা ক্ষীণ হলেও বিজ্ঞানীরা এখনও আশা ছাড়ছেন না। আরও কয়েক দিন চেষ্টা চালানো হবে বিজ্ঞানীদের তরফে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন